‘রমজান আসছে তাই’ অস্থির মোংলার বাজার
২ এপ্রিল ২০২২ ১৮:৩৫
বাগেরহাট: রমজানের আগের দিনেই দ্বিগুণ বেড়েছে বেগুন, শশা, খিরাই, কাঁচা মরিচের দাম। দুই তিনদিন আগে বেগুনের কেজি ছিলো ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। ৩০ থেকে ৩৫ টাকার শশা, খিরাই বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। ৫০ টাকার কাঁচামরিচ ও করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে অন্যান্য কাঁচামালেরও।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে মোংলার বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা যায়। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রমজান আসছে তাই বাজার অস্থির হয়ে গেছে।
কাঁচামাল বিক্রেতা আ. জলিল ও রফিক বলেন, ‘পাইকাররা দাম বাড়িয়েছেন তাই তারাও বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। তবে মোংলা পৌর শহরের প্রধান বাজারে কাঁচামালের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। বাজারে মালের ঘাটতি নেই।’
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারদের সঙ্গে যোগসাজসে স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্রই পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। এসব নিয়ে অবশ্য মাথাব্যথা নেই স্থানীয় প্রশাসনের। তাই ক্ষুব্ধ ক্রেতারা বলছেন, ‘প্রশাসনের তদারকি না থাকায় সিন্ডিকেট চক্র বেপরোয়া।’
উপজেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য নুর আলম শেখ বলেন, ‘দেশের সব জায়গায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। তার প্রভাব মোংলার বাজারেও। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি তারপরও দ্রব্যমূল্যের ঊধ্বগতি অকল্পনীয়। ফলে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। পৌর শহর ছাড়াও আশপাশের বাজারগুলোতে দাম কম। কিন্তু সিন্ডিকেট চক্র প্রধান এ বাজারে দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। সিন্ডিকেট না ভাঙলে কোনভাবেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’
শহরের বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সবজি চাষী ও ব্যবসায়ী গোলাম রসুল, জয়নাল ও মহাসিন আকন বলেন, ‘মোংলা বাজারের পাঁচটি সমিতি (মাছ, মাংস, পান, মুরগি ও কাঁচা বাজার সমবায় সমিতি) এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে পৌর শহরের হাজার হাজার ক্রেতা। পাঁচ সমিতির সমন্বয়ে গঠিত নতুন এই সিন্ডিকেট চক্রের সভাপতি আফজাল ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ওরফে কসাই নজরুল ও ক্যাশিয়ার আলম ওরফে আলু আলম।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সমিতির নেতা আফজাল ফরাজী। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বার্থে অর্থাৎ কোন ব্যবসায়ী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য এক হয়েছি, ব্যবসায়িক শক্র মোকাবিলা করতে, দাম বাড়ানোর জন্য নয়। যদি কেউ দাম বাড়ায় আমরা তার পক্ষে থাকবো না। যারা দাম বাড়াবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা প্রশাসনের পক্ষে থাকবো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দুই একদিনের মধ্যে অভিযান চালানো হবে। এছাড়া প্রত্যেক দোকানে মূল্য তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক করা হবে। আর কোনো সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা হবে।’
সারাবাংলা/এমও