Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ৫ ঘণ্টা প্রতীকী অনশন বিএনপির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ এপ্রিল ২০২২ ১৯:৫২

ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে পাঁচ ঘণ্টা প্রতীকী অনশন পালন করেছে বিএনপি। শনিবার (২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ অনশন শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৩টায়।

অনশনের শুরুতেই মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চাল, ডাল, তেল, আটা, সবজিসহ সমস্ত জিনিসের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে এখন অনেকের সহ্যের বাইরে চলে গেছে। এর মধ্য দিয়ে এক ভয়াবহভাবে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই অনির্বাচিত সরকারকে যদি পরাজিত করতে না পারি, তাদের যদি ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারি, তাহলে এদেশের মানুষের অস্তিত্ব থাকবে না।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আসুন আমরা আজ এই গণঅনশনের মধ্য দিয়ে আমাদের যে প্রতিবাদ তা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিই। এই গণঅনশন পালন করে সরকারকে জানিয়ে দিন যে, তোমাদের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই। ব্যর্থতায় দায় স্বীকার করে আপনারা সরে যান, ক্ষমতা ছেড়ে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে এই অনশন শুরু হয় সকাল ১০টায়। বিকেল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসনকে পানি খাইয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

গত ফেব্রুয়ারি থেকে বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জেলা জেলায় প্রতীকী অনশনের কর্মসূচিও করেছে তারা। আর শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে মহানগরসহ অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাত ও রাস্তায় পলিথিন ও মাদুর বিছিয়ে এই অনশনে অংশ নেয়। এক পর্যায়ে গণঅনশন সমাবেশে পরিণত হয়।

বিজ্ঞাপন

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সব কথার এক কথা, সরকারের পদত্যাগ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। হাসিনা সরকারকে দাফন না করতে পারলে, সরাতে না পারলে, যে ধরনের সরকারই চান না কেন- তা হবে না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পতন ঘটাই। তারপর সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন করি, তারপরে দেশটা মেরামত করি।’

অনশনে স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘লগি-বৈঠা আমাদের অস্ত্র নয়। আজ যারা সরকার চালায় তাদের এই অস্ত্রের প্রয়োজন আছে। আমাদের অস্ত্র লগি-বৈঠা নয়। বিএনপির অস্ত্র হচ্ছে জনগণ। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এদেশে জনগণের সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।’

ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন কেন?

অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা সত্যি যে, জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে মানুষ বেকুব হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী দু’দিন আগে সংসদে বলেছেন, দ্রব্যমূল্য জনগণের সহ্যের মধ্যে আছে। ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়ানোর কথা ছিল। সেই চালের দাম আজকে ৭০ টাকা। তার পরেও লজ্জা নাই। বলে কি না- এমন কোনো দাম বাড়ে নাই। তারা বলে, মানুষের টাকা আছে, কেনার ক্ষমতা বেড়েছে। মানুষের কেনার ক্ষমতা যদি বাড়ে বাজার করবার জন্য কলকাতা, দিল্লি, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর- টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দেয় না।’

তিনি বলেন, ‘একটাই কাজ করতে হবে। এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যে, সরকার যাতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং পালাবার কোনো পথ না পায়। আমি বলি, মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আরও যদি সোজা-সাপটা বলি, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।’ সরকারকে হটাতে সব গণতান্ত্রিক দলকে এক হয়ে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান মান্না।’

বিএনপির মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় গণঅনশনে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, আনিসুর রহমান তালুদকার খোকন, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান বক্তব্য দেন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহানগর নেতা ইশরাক হোসেন, নবী উল্লাহ নবী, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মহিলাদলের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষকদলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, জাসাসের হেলাল খান, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, তাঁতী দলের মজিবুর রহমান, মৎস্যজীবীদলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের ফজলুল রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।

গনঅনশনের সংহতি প্রকাশ করে বক্ততৃা করেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জামায়াতের নুরুল ইসলাম বুলবুল, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, এনডিপির আবু তাহের, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, এম আবদুল্লাহ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

অনশন কর্মসূচি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাঁচ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচিতে শতাধিক নেতার বক্তব্যের কারণে বিকেল তিনটা বেজে যাওয়ায় সমাপনীতে বিএনপি মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য বক্তব্য না দিয়ে অনশনের সমাপ্তি টানেন।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতীকী অনশন বিএনপি

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর