টিপ পরায় ইভটিজিং— পুলিশ সদস্যের শাস্তি চাইলেন সুবর্ণা
৩ এপ্রিল ২০২২ ১৭:০১
ঢাকা: টিপ পরা থাকার কারণে শিক্ষকের ইভ টিজিংয়ের শিকার হওয়ার ঘটনায় দোষী পুলিশ সদস্যের শাস্তি দাবি করেছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সুবর্ণা মুস্তাফা।
সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি বলেন, টিপ পরা না পরা নারীর অধিকার। এ নিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের ইভ টিজিং করা বা কু কথা বলা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ যেকোনো ধর্মের নারীর জন্যই লজ্জার বিষয়। শুধু নারী নয়, গোটা বাংলাদেশের জন্যই লজ্জার ঘটনা। ওই কলেজ শিক্ষককে যে পুলিশ সদস্য ইভ টিজিং করেছেন, কুৎসিত ভাষায় গালাগাল দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।
রোববার (৩ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ কথা বলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে চলছিল সংসদ অধিবেশন।
এর আগে, গতকাল শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষকা ড. লতা সমাদ্দার ফার্মগেট এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার অভিযোগ, কপালে টিপ থাকায় একজন পুলিশ সদস্য ইভ টিজিং করেন এবং তাকে কুৎসিত ভাষায় গালিগালাজ করেন। ড. লতা প্রতিবাদ জানাতে গেলে ওই পুলিশ সদস্য তার পায়ের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যান বলেও অভিযোগ তার। এ ঘটনায় শনিবারই তিনি শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ঘটনার কথা তুলে ধরে সুবর্ণা মুস্তাফা পয়েন্ট অব অর্ডারে বলেন, দেশের সংবিধানের কোন আইনে লেখা আছে একজন নারী টিপ পরতে পারবেন না? তিনি যে ধর্মেরই হোন না কেন, তিনি বিবাহিত হোন আর অবিবাহিত হোন— টিপ পরতে চাইলে এটি তার অধিকার।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্য এই শিক্ষকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, সেটি সুস্পষ্টভাবে ইভ টিজিং। এ ধরনের আচরণের মাধ্যমে ওই কলেজ শিক্ষককে অসম্মান করা হয়েছে। তিনি যখন এর প্রতিবাদ করতে গেছেন, তাকে তুই-তোকারি করা হয়েছে। এমন কুৎসিত বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে, যা তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, আমি কোন দল করি বা কোন দলের প্রতিনিধিত্ব করি— এই বিষয়টি সেসবের ঊর্ধ্বে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন, মানুষ আগে। সবাই সমান। মানুষের অধিকার সবার আগে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও বলেছেন, মানুষকে ভালো বাসতে হবে। তার কথা বলার অধিকার, তার জীবনযাপনের অধিকার, তার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি এসময় আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগও করেছেন ওই শিক্ষক। আমি অনুরোধ করব— যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়টি দেখেন, তারা এখনো এ বিষয়টি নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে থাকলে যেন অনতিবিলম্বে জোরালো পদক্ষেপ নেন। আশা করি তারা দ্রুত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন ও পদক্ষেপ নেবেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর