ঢাকা: টিপ পরিহিত থাকায় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে হেনস্তা করার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেককে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া ওই ঘটনা তদন্তে ডিএমপি দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, ঘটনাটি শতভাগ আন্তরিকতার সঙ্গে পুলিশ তদন্ত করছে।
অভিযুক্ত কনস্টেবলকে তদন্তের স্বার্থে বরখাস্ত নাকি তদন্তে দোষী হওয়ার কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে— জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, গণমাধ্যমে খবরটি যেভাবে আসছে, তাতে পুলিশের তদন্ত নিয়ে শতভাগ বিশ্বাসযোগ্যতা যেন থাকে এবং গাফিলতির অভিযোগ যেন না উঠে, সে কারণেই অভিযুক্ত কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- ইভটিজিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন কনস্টেবল তারেক: ডিসি বিপ্লব
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, অভিযোগ ওঠার পর থেকেই পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করছে। অভিযুক্তকেও শনাক্ত করেছে। পুলিশ যে তদন্তে আন্তরিক— এটি এরই মধ্যে প্রমাণিত। ঘটনার তদন্তে গাফিলতির কোনো সুযোগ নেই। তবে অভিযোগকারীকে কিছু বিষয় প্রমাণ করতে হবে। আমাদের কমিটি তদন্ত করছে। তারা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলবে, যোগাযোগ করবে। অভিযোগকারীও তার অভিযোগ প্রমাণের সুযোগ পাবেন।
এর আগে, গত ২ এপ্রিল রাজধানীর ফার্মগেটে সেজান পয়েন্টের পাশের সড়কে একজন পুলিশের পোশাক পরিহিত সদস্য তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক ড. লতা সমাদ্দারকে হেনস্তা করেন। ড. লতা টিপ কেন পরেছেন— এমন কথা বলে তাকে গালিগালাজও করেন বলে অভিযোগ ওই শিক্ষকের।
আরও পড়ুন- টিপ পরায় শিক্ষককে হেনস্তা: পুলিশের বিচার চেয়ে আল্টিমেটাম
এ অভিযোগে শনিবার শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ড. লতা সমাদ্দার। অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) আকারে নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। সোমবার (৪ এপ্রিল) সকালে অভিযুক্ত কনস্টেবল নাজমুল তারেককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয় বলে জানান তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার।
ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগের কনস্টেবল নাজমুল তারেকের সহকর্মীরা জানিয়েছেন, ১৯৯১ সালে জন্ম নাজমুল তারেকের। যশোরের একটি হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। ২০১১ সালে কনস্টেবল পদে নিয়োগ পান। আট মাস ধরে ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগে কাজ করছেন তিনি।
সহকর্মীরা আরও জানান, বছরখানেক আগে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দাঁড়ি রাখেন নাজমুল। ওই সময় থেকেই তিনি ধর্মীয় অনুশাসন কঠোরভাবে মেনে চলতে থাকেন। শনিবার তিনি ফার্মগেটের বাসা থেকে বেরিয়ে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় টিপ পরা ওই শিক্ষকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ান।
আরও পড়ুন-
- রোজ তাই মেয়েটাই টিপ দেয় কপালে
- কপালে টিপ পরায় শিক্ষিকাকে হয়রানি, প্রাণনাশের চেষ্টা
- টিপ পরায় ইভটিজিং— পুলিশ সদস্যের শাস্তি চাইলেন সুবর্ণা
- টিপ পরায় ইভটিজিং, অভিযুক্ত সেই পুলিশ কনস্টেবল আটক
- টিপ পরায় শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি, অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে