Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুচিকিৎসার নামে প্রতারণা, ভারতে নিয়ে কেটে নেয় কিডনি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৪ এপ্রিল ২০২২ ১৮:৪৪

ঢাকা: সুচিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকদের জিম্মি করে অবৈধভাবে মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করতো। পরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সেই রোগীকে দিতো দেশে পাঠিয়ে। এবার সেই প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রাণী দাসের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

র‌্যাবের দাবি, মানব দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা প্রতারক চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ লোকদের সুচিকিৎসার নামে প্রলোভন দেখিয়ে জিম্মি করে। পরে তাদের বিদেশে নিয়ে অবৈধভাবে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে দেয়। এ রকম একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য মোছা. বিউটি বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছে থেকে মেডিকেলের কাগজপত্রের একটি ফাইল এবং একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ওই নারী জানায়, বাদী গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ১০ টার দিকে শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করলে তার স্ত্রী আসামির সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। তখন আসামি তাদের তার বাসায় আসতে বলে। বাদী এবং তার স্ত্রী গত ১১ সেপ্টেম্বর আসামি বাসায় যায়। আসামি তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে বাদীকে ভারতে নিয়ে সু চিকিৎসার প্রলোভন দেখায়। আসামি ভারতে কয়েকবার আসা-যাওয়া করেছে এবং বিভিন্ন লোককে ভারতে নিয়ে কম খরচে চিকিৎসা করিয়ে এনেছে মর্মে বাদীকে তার পাসপোর্ট ও বিভিন্ন কাগজপত্র দেখায়। বাদী আসামির প্রলোভন বুঝতে না পেরে তাকে বিশ্বাস করে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী নিজের ও স্ত্রীর পাসপোর্ট-ভিসা করে।

বিজ্ঞাপন

পরে গত বছরের ৪ নভেম্বর আনুমানিক বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে বাদী স্ত্রীসহ যশোরে যায়। সেখান থেকে আসামি তাদের বর্ডার দিয়ে ভারত পাঠিয়ে দেয়। বাদী ও তার স্ত্রী ভারত পৌঁছালে সেখানে অবস্থানরত মো. শহীদ (৪৫) নামের এক জন তাদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে রাখে। পরে সেখান থেকেই বাদীকে ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তার দেখায়। এমনকি কৌশলে বাদীর কাছ থেকে স্বেচ্ছায় কিডনি দান করার সম্মতির কাগজপত্রে সই নেয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কয়েক দিন পর প্রতারক চক্রের সদস্যরা কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর কথা বলে বাদীকে নিয়ে ভর্তি করায়। সেখানে বিভিন্ন তারিখে বাদীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। এর পর এক পর্যায়ে জানায়, তার অপারেশন করতে হবে। এর কয়েক দিন পর ওই হাসপাতালের একটি রুমে বাদীকে একা নিয়ে অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে বাদীর জ্ঞান ফেরার পর তার পেটের বাম পাশে কাটা দেখে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, সে তার কিডনি স্বেচ্ছায় দান করেছে। বাদী তখন প্রতারক চক্রের কাছে তার কিডনি বিক্রি করার কথা জানতে চাইলে ভয়-ভীতি দেখায়। এর পর গত ২১ ফেব্রুয়ারি ওই প্রতারণার শিকার ওই ব্যক্তিকে স্ত্রীসহ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

র‌্যাব জানায়, প্রতারক চক্রের গ্রেফতার ও পলাতক দুই সদস্য পরস্পর যোগসাজসে বাদীকে সুচিকিৎসা করানোর কথা বলে অনুমতি ছাড়া তার বাম পাশের কিডনি বিক্রি করে দেয়। পরে বাদী বাংলাদেশে এসে সুচিকিৎসা না পেয়ে অসহায় জীবন যাপন করছে। এছাড়া গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

কিডনি প্রতারণা ভারত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর