ঢাকা: নতুন প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে না জানাকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধ ও সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
অধিবেশনে মুজিবুল হক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় চার নেতার নাম জানে না, কোনো কোনো শিক্ষার্থী একজন শহিদ মুক্তিযোদ্ধারও নাম বলতে পারেনি। তারা স্মৃতিসৌধ ও শহিদ মিনারের মধ্যে পার্থক্য বোঝে না। ৩ নভেম্বর নিয়ে শতভাগ শিক্ষার্থীর ধারণা ভুল। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে— এটি তারা জানে না। স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না। ভবিষ্যত প্রজন্ম যদি এভাবে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে না জানে, সেটি খুবই দুঃখজনক।
মুজিবুল হক বলেন, এই গবেষণার ফলাফল সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। কেন শিক্ষার্থীরা জানবে না? গলদটা কোথায়? ভুলটা কোথায়? বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে তো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়াই হয় না।
এ প্রেক্ষাপটে মুজিবুল হক চুন্নু শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান যেন সব স্কুলে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণিতে পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বাধ্যতামূলক করা হয়।
এর আগে, পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর এলাকার একমাত্র ফসল বোরো। এই ফসল ঘরে তুলতে ১০-১৫ দিন সময় প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তে বোরো ফসল হুমকির মুখে। কারণ হাওর এখন সীমান্তের ওপার থেকে ঢল নেমে আসছে। সুনামগঞ্জেও বৃষ্টি হচ্ছে। মনে হচ্ছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসন এর গুরুত্বটা বুঝতে পারছেন না। অথচ এই ফসলহানি হলে হাহাকার দেখা দেবে।
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, এই ফসলহানি হতে বেশিদিন লাগে না। একদিনের ভেতর একটি-দু’টি বাঁধ ভাঙতে শুরু করলেই গোটা হাওর তলিয়ে যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালি বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকেছে। আর কয়েকটি বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। স্থানীয় লোকজন বাঁধ রক্ষায় কাজ করছে। ফসল তোলার জন্য কয়েকটা দিন দরকার। এই ফসলকে গুরুত্ব দিয়ে পানিসম্পদ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উচিত সবকিছু বাদ দিয়ে ফসল রক্ষা করা। ৯ লাখ টন ধান, এটি কিন্তু বিশাল বিষয়।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে পীর ফজলুর রহমান বলেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এখানে উপস্থিত আছেন। তিনি হাওরে বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যেগুলো নির্মাণ হয়েছে, সেগুলো সঠিকভাবে হয়েছে কি না, যদি না হয়ে থাকে স্পটে গিয়ে যেখানে যা দরকার তাই করতে হবে।
এর আগে সরকারি দলের সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী আলোচনার সূত্রপাত করে বিএনপি ও বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের সমালোচনা করেন।