ভূমি জরিপ: টাকা দিলে কাজ হয়, না দিলে কাজ হয় না
৭ এপ্রিল ২০২২ ০৮:০৯
ঠাকুরগাঁও: জেলায় ভূমি জরিপ ও নকশার কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ভূমি নকশার কাজে সার্ভেয়াররা (আমিন) প্রতি শতাংশ জমির বিপরীতে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যে নেমেছেন। সম্প্রতি ঘুষের টাকা ফেরত পেতে জরিপ কাজে আসা কর্মকর্তাদের বাড়ি ঘেরাও করেন এলাকাবাসী।
উপজেলা সেটেলমেন্ট কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৭-২০০৮ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর মৌজায় পাঁচটি নকশা জরিপের কাজ শুরু হয়। তিনটি নকশার কাজ শেষে পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়। এ বছরের মার্চে জগন্নাথপুর মৌজায় দুই হাজার ৪৪টি দাগে ৯শ ৩৭ একর জমির জরিপের কাজ শুরু করে ভূমি জরিপ কর্তপক্ষ। সর্দার আমিন, বদর আমিন, চেইনম্যানসহ তিনজন করে ২৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ শুরু করেন তারা।
ভূমি প্রশাসন ঘুষ লেনদেন, অনিয়ম, দুর্নীতি এড়াতে ভূমি জরিপ শুরুর আগেই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাইকিং করে জনগণকে জরিপের বিষয়টি অবগত করেছেন। ১৯৫৫ সালে প্রজাস্বত্ব বিধি মোতাবেক জরিপ চলাকালীন জমির মালিককে জমির রেকর্ড, দলিল, খাজনা, খারিজ ও দখলের কাজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। শর্ত সাপেক্ষে ওই মালিকের নামে জমি রেকর্ডভুক্ত হবে।
শহরের শান্তিনগর, মুসলিমনগর ও বিহারিপাড়া মহল্লার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, প্রতি শতাংশ জমির জন্য সংশ্লিষ্টদের এক হাজার টাকা হিসেবে ঘুষ দিতে হচ্ছে। যে জমির মালিকানায় অসঙ্গতি রয়েছে, সেই জমির জন্য প্রতি শতাংশে পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা আদায় করছেন। টাকা দিলে কাজ হয়, না দিলে কাজ হয় না। বাড়াবাড়ি করলে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলে জানান তারা। এই টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতিটি গ্রুপে রয়েছে একাধিক দালাল চক্র।
দিপু, স্বপন, সুলতান, খলিলুর, সুলতানসহ একাধিক সর্দার আমিনের সঙ্গে মোটা অংকের ঘুষের বিষয়ে কথা বললে বিষয়টি এড়িয়ে যান, তবে কাজের বিনিময়ে সন্তুষ্ট হয়ে কেউ যদি খুশি করায় তাতে দোষের কিছু নেই বলে দাবি করেন তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জরিপ কাজে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, জরিপ কাজে যথাযথভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া আছে। অবৈধভাবে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ আসলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/একেএম