ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারীর তাহেরবাগ এলাকার একটি বাসায় স্বপ্না আক্তার (১৩) নামে এক গৃহকর্মীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ওই কিশোরীর মা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ওই গৃহকর্মীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে থানায় নেওয়া হয়।
ভুক্তভুগী গৃহকর্মী স্বপ্না নিজেই অভিযোগ করে জানায়, বাসার কাজ দ্রুত করতে না পারায় গৃহকর্ত্রী আখি তাকে সব সময় মারধর করত। মোটা লাঠি দিয়ে তার শরীরে আঘাত করতো। এ ছাড়া বাসায় হাতের কাছে যা পেত তা দিয়েই তাকে মারধর করত। কয়েকসপ্তাহ আগে তার গলায় ফাঁস লাগিয়েছিল গৃহকত্রী আঁখি।
স্বপ্না আরও অভিযোগ করে, একসঙ্গে অনেক কাজ করতে বলা হতো তাকে। কাজ করে ক্লান্ত হওয়ার পর বিশাম নিলে আবার নির্যাতন করা হতো।
ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন হাওলাদার জানান, সকালে ভুক্তাভোগী কিশোরীর মা গৃহকর্মী স্বপ্নাজে থানায় নিয়ে আসেন। গৃহকর্ত্রী তাকে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ করে। ওই গৃহকর্মীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে তাকে আবার থানায় নিয়ে আসা হয়। শিশুটির মা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
হাসপাতালে স্বপ্নার দূরসম্পর্কের আত্মীয় আসমা আক্তার বলেন, স্বপ্নার বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবা শাহআলী রিকশা চালক আর মা মাহফুজা বেগম গৃহিণী। তারা গ্রামে থাকেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা কাজের জন্য তাকে বনগ্রামে তার বাসায় দিয়ে যান। এক নারীর মাধ্যমে স্বপ্নাকে ১৩ নম্বর তাহেরবাগের মাসুম বিল্লাহ ও আখির বাসায় কাজে দেওয়া হয়।
আসমা আরও বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার গৃহকর্ত্রী আঁখি স্বপ্নার মাকে ফোন দিয়ে জানান, স্বপ্নার ডায়রিয়া হয়েছে, তাকে নিয়ে যেতে হবে। গতকাল বিকেলেই তার মা গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে স্বপ্নাকে ওই বাসা থেকে নিয়ে আমার বাসায় যান। সকালে তাকে গোসল করানোর সময় তার সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। তখন স্বপ্না মায়ের কাছে গৃহকত্রীর নির্যাতনের সব ঘটনা খুলে বলে। এরপরই তাকে নিয়ে প্রথমে থানায় যান তারা। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় স্বপ্নাকে।