‘উন্নত দেশগুলোর পরিবেশ দূষণে ভুগতে হবে বাংলাদেশকেও’
৭ এপ্রিল ২০২২ ১৫:১২
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, নিজেদের দূষণের কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমেরিকা, ব্রাজিল, চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোর অতিমাত্রার দূষণের ফলে সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। এর কারণে বাংলাদেশের ২০ শতাংশ জমি পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে হঠাৎ ডায়রিয়া ও কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। এর পেছনে দায়ী পানিদূষণ। এর কারণে ডায়রিয়া ও কলেরা বেশি হচ্ছে। এজন্য পরিবেশ দূষণও দায়ী। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দেশের মাটি, পানি ও বায়ু ভালো রাখতে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে প্রাণীজগৎ ভালো থাকবে। আমাদের পৃথিবীতে উন্নয়ন হচ্ছে ঠিক, কিন্তু সবকিছুই আমরাই নষ্ট করছি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে অনেক বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে। অন্যান্য জায়গায় কম থাকলেও ঢাকার দূষণ সবচেয়ে বেশি। গাছপালা কেটে আমরা পরিবেশের ক্ষতি করছি। ঢাকায় দেড় কোটি লোক বসবাস করে। কিন্তু এত শব্দ দূষণ, ধোয়া আর ধুলোবালির কারণে এ শহরে সংক্রামক, অসংক্রামক সব রোগই বাড়ছে।
জাহিদ মালেক বলেন, জলবায়ু সমস্যার কারণে মানসিক চাপও বাড়ছে। মাদক ও ধূমপান স্বাস্থ্য সমস্যার অনেক বড় কারণ। আমাদের পানিদূষণ রোধ করতে হবে। কৃষকদের বেশি কীটনাশক ব্যবহার কমাতে হবে। জমিতে বেশি কীটনাশক ব্যবহারের কারণে উৎপাদিত খাদ্যে মানুষের অসুস্থ হওয়ার হার বাড়ছে।
তিনি বলেন, নদীদূষণ, বায়ুদূষণ ও পরিবেশদূষণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। কিন্তু আমরা মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। আমরা উন্নত যন্ত্রপাতি ও স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি।
দেশের করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেক ভালো। করোনা ব্যবস্থাপনাতেও বাংলাদেশ রোল মডেল। করোনাকে আমরা শূন্যের কোটাতে নামাতে চাই।
তিনি বলেন, দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। যে কারণে বিশ্বের ২০০টি দেশের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে অষ্টম অবস্থানে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন,আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্যাভিসহ বেশকিছু বিদেশি সংস্থা করোনা মোকাবিলা ও ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি ভালোভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব করায় বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। আফ্রিকার অনেক দেশ এখনো ২০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারেনি। অথচ করোনা নিয়ন্ত্রণে সামনের সারিতে থাকা বাংলাদেশ ৯৫ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবার মানসিকতার কারণে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসংক্রামক ব্যাধি বাড়ছে। এটা নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু সমস্যার কারণে রোগবালাই বাড়ছে।
তিনি বলেন, দ্রুত নগরায়নের ফলে যানজট, ঢাকায় শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণের কারণেও অনেক রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ুর কারণে যে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মৃত্যু বাড়ছে তা আমরা মোকাবিলা করতে চাই।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিঞা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ’ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপ সভাপতি এম ইকবাল আর্সলানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি
জলবায়ু নদীদূষণ পরিবেশদূষণ বায়ুদূষণ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস স্বাস্থ্যমন্ত্রী