বিদেশিদের পরামর্শে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি: মোশাররফ
৯ এপ্রিল ২০২২ ১৭:৩১
ঢাকা: বিদেশিদের পরামর্শে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না তার পরামর্শ দেবে জনগণ, অন্য কেউ না। জনগণ যেদিন পরামর্শ দেবে, জনগণের আস্থা যেদিন হবে যে, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। জনগণ নিজের হাতে ভোট দিতে পারবে, মেশিনের মাধ্যমে নয়। সেদিন জনগণ বলবে আপনারা নির্বাচনে যান। জনগণের দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে, বিদেশি কোনো পরামর্শে নয়।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সিলেট জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। গত ৪ এপ্রিল রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ সহায়তা চান। বৈঠকে বাংলাদেশের অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র ও নির্বাচনের তাগিদ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একটি মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল। আজ বাংলাদেশ যে সংকট তা হচ্ছে- দেশে গণতন্ত্র নাই, মানুষের অধিকার নাই, ভোটের অধিকার নাই, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যারকাণ্ড, মামলা, হামলা এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। স্বৈরাচারী সরকার, গায়ের জোরের সরকার সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। দেশ আজ ধ্বংসের কিনারায় গিয়ে পৌঁছেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা লজ্জিত, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকায় গিয়ে ধরনা দিচ্ছেন। ধরনার ইংরেজি হচ্ছে লবিং। কয়েক দিন আগেও আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, বিএনপি নাকি ধরনা দেয়। আজ বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রমাণিত ধরনা কারা দিচ্ছে। এই সরকার সব দিকে যখন মনে করছে, তারা ব্যর্থ, সব ক্ষেত্রে তাদের পরাজয়- তখন তারা বিদেশিদের সহযোগিতা চাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। এটা তো বেশি কিছু কথা নয়। এই সরকার পর পর তিনটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় নির্বাচনে যে কারচুপি, যে ডাকাতি করেছে তাতে জনগণ ভোটের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আমাদেরও আস্থা নাই। এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ গ্রহণযোগ নির্বাচন হবে না। এটা আমরা ঘোষণা করেছি। এখন সরকারের উচিত পদত্যাগ করে নির্দলীয়-নিরেপক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়া। তাহলে দেশের সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা আসবে। বিএনপিও জনগণের দল হিসেবে সেই নির্বাচনে অংশ নেবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকায় গিয়ে অনুরোধ করেছে, তারা যেন বিএনপিকে বলে- নির্বাচনে যাওয়ার জন্য। এটা তো অন্য কারও বলার বিষয় না। আমরা মনে করি, এদেশের মানুষ যেদিন বলবে তারা ভোট দিতে পারবে, তাদের আস্থা ফিরে এসেছে সেদিন বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার নাই। সে জন্য র্যাবসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এটা দেশের জন্য সম্মানের নয়। বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সেই ব্যাপারেও এখানে সমাধান না করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা গিয়ে তাবেদারি করছে।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মোক্তাদির আহমেদ, তাহসিনা রুশদীর লুনা, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামিম আহমদ ও সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম