Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্নীতির ‘খতিয়ান’ নিয়ে দুদকে যাচ্ছে বিএনপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ এপ্রিল ২০২২ ১১:৪১

ঢাকা: গণমাধ্যমে প্রকাশিত এবং প্রচারিত দুর্নীতির খবর বিশ্লেষণপূর্বক অভিযোগ আকারে তৈরি করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) সকাল সোয়া ১১ টায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও আপনারা (গণমাধ্যম) এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির খবর আপনাদের পত্র-পত্রিকা, টিভি চ্যানেল এবং অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশ এবং প্রচার করছেন। এই সাহসিকতার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ দিতেই হয়। কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত এসব দুর্নীতির খবরের ওপর ভিত্তি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো অ্যাকশনে যায়— এমনটি আমাদের চোখে পড়ে না। বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালন করায় দুদকের একজন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং হেনস্তা করার ঘটনা ঘটেছে।’

‘তারপরও একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এবং প্রচারিত দুর্নীতির খবরগুলো যাচাই-বাছাই করে দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেব। এতে কোনো লাভ হবে কিনা জানি না। তবে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই কাজটা করতে চাই। আমাদের দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ একটি প্রতিনিধি দল দুর্নীতির অভিযোগগুলো নিয়ে দুদকে যাবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘সরকারের এক উপদেষ্টা (সালমান এফ রহমান) ও আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) টেলিফোন কনভারসেশন যেটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সেই কনভারসেশনে যে বিষয়গুলো ছিল সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম, এর তদন্ত হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছিলাম। ফরিদপুরের অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি পরিবার সেই পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকা অর্থ পাঁচারের অভিযোগ এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আর কোনো কথাই হচ্ছে না এগুলো নিয়ে। আমরা দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা দুর্নীতির এই বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেব এবং তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করব। এরপরে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেকটা ইস্যু আমরা জাতির কাছে তুলে ধরব এবং একই সঙ্গে দুদকে পাঠাব’বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘‘দুদকের বেশির ভাগ সরকারি আমলাকে নিয়োগ দেওয়া হয় অথবা সাবেক আমলাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করেন যে, সরকারের উচ্চ পর্যয়ে কর্মকর্তা যারা আছেন তারা অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত যাতে না হয় এবং দুর্নীতির মধ্যে তারা যেন না আসেন।’

ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেগুলোকে ধবংস করে ফেলার জন্য দুর্নীতি সবচেয়ে বড় ব্যধি। এটা এখন ক্যান্সার আকারে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও পাবেন না যে, ঘুষ দেওয়া ছাড়া কোনো কাজ হয়, কথা শুনবে না, আইনআদালতে বিচার পাবে না এবং সবচেয়ে খারাপ অবস্থাটা হচ্ছে আদালতে, সেখানে সব হুকুমে কাজ হয় সেখানেও কোনো কাজ হয় না দুর্নীতি ছাড়া। এর কারণটা হচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই মুহুর্তে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখন দরকার নেই। তবে সেটা (শ্বেতপত্র) সক্রিয় আলোচনার মধ্যে আছে, বিবেচনার মধ্যে আছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সংবাবাদ সম্মেলন শেষে দলের সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুকে নিয়ে দুদকের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। 

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/একে

টপ নিউজ দুর্নীতি বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর