দুপুরেই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ ডিএমপির
১২ এপ্রিল ২০২২ ১৩:১৬
ঢাকা: ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পয়লা বৈশাখে রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যেই শেষ করতে হবে। এরপর আর কোনো অনুষ্ঠান থাকবে না।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় রমনা পার্কে পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার এ নির্দেশ বলেন।
তিনি জানান, রমজান মাসের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২ বছর করোনা মহামারির কারণে বৈশাখী উৎসব হয়নি। এবার পরিস্থিতি একটু উন্নতি হয়েছে। তাই সীমিত আকারে হলেও বৈশাখী উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওইদিন ভোরবেলা থেকে সাংস্কৃতিক উৎসব চলবে। বেলা ১১টার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে। এরপর আর তেমন কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না। তাই বেলা ১টার পর আর কাউকে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বেলা ২টা পর্যন্ত সবাই বের হবে। এরপর আর কেউ থাকবে না।
কমিশনার বলেন, উৎসবে যেহেতু এবার কোনো খাবার দোকান থাকছে না। তাই কেউ যেন শিশুদের উৎসবস্থলে নিয়ে না আসেন। অনুষ্ঠানস্থলে ভুভুজেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চুরি ছিনতাই ঠেকাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইভটিজিং প্রতিরোধে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষের সাথে মিশে থাকবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাবি, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকার পুরোটাই কর্ডন করা থাকবে। পুরো এলাকা একাধিকবার স্যুইপিং করা হবে। সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে। ওয়াচ টাওয়ারে দুর্বীণ দিয়ে নজরদারি করা হবে। আর্চওয়ে থাকবে। সোয়াত ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট থাকবে। যেহেতু একটি লেক আছে, সেহেতু নৌ পুলিশের ডুবুরি দল থাকবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে, সেই শোভা যাত্রায় বাইরে থেকে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত যারা থাকবেন, তারা কঠোর ভূমিকা পালন করবেন। সেভাবেই তাদের নির্দেশনা দেওয়া থাকবে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় যারা অংশ নেবেন, তাদের আগেই প্রবেশ করতে হবে। কেউ মুখোশ পড়ে আসতে পারবেন না।
২০০১ সালে রমনা বটমুলে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সেই ঘটনা মাথায় রেখে আমরা নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ডিএমপির সকল টিম একযোগে কাজ করবে। সিসিটিভি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি করা হবে। কোথাও কিছু ঘটলে তা সঙ্গে সঙ্গে মাইকে বলা হবে। সবাই একযোগে ঝাপিয়ে পড়বে। সেরকম কিছু ঘটলে কিভাবে উদ্ধার করতে হবে, কিভাবে চিকিৎসা দিতে হবে তার সব ব্যবস্থাই থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, রমজান মাসের কারণে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সীমিত করা হয়েছে। এরপর যখন রমজান থাকবে না, তখন পুরো সময় ধরে বর্ষবরণ পালন করা হবে। যেহেতু রমজান মাস, এই এলাকা পুরোটাই আটকানো থাকবে। উৎসবের সঙ্গে জড়িতদের ৯০ শতাংশই মুসলিম এবং রোজাদার তাই দুপুর ২টার মধ্যেই অনুষ্ঠান শেষ করা হবে। তাছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ১১টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। পড়ে আর কিছু থাকে না। মেলা ও কিছু অনুষ্ঠান থাকে সেগুলো এবার থাকছে না।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার কোনো আশঙ্কা নেই। এরপরও আমরা কোনো কিছু উড়িয়ে দিচ্ছি না। কেউ একজন ছুরি নিয়ে এসে কাউকে আঘাত করলেও পুলিশের ঘারে দোষ চাপে তাই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি যাতে সেটিও ঘটতে না পারে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্র জঙ্গি সংগঠন ও হামলার বিষয় নিয়ে গুরুত্ব কিছু ম্যাসেজ দিয়েছে। এছাড়া আমরা দেখছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু র্যাডিকালাইস সংগঠনের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে তাই আমরা বারবার স্যুইপিং করছি। যাতে কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য না থাকে।
সারাবাংলা/ইউজে/এএম