২ কৃষকের আত্মহত্যা ‘দুঃখজনক’ বললেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান
১৩ এপ্রিল ২০২২ ২৩:৫৯
রাজশাহী: গোদাগাড়ীতে সেচের পানি না পেয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর দুই কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ বলেছেন গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান। সেচ ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ কথা বলেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান। বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে তাদের রাজশাহীতে বরেন্দ্র ভবনে নিজ দফতরে ডেকে নিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে এসময় উন্নয়নকর্মী মো. আরিফ, গোদাগাড়ী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ কুমার সরকারসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ ও ভারপ্রাপ্ত সচিব ইকবাল হোসেনসহ উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীও।
বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান বলেন, বিএমডিএ কৃষকদের প্রতিষ্ঠান। কৃষকদের স্বার্থেই বিএমডিএ কাজ করে। কিন্তু কৃষকদের সঙ্গে বিএমডিএ’র যোগাযোগের ঘাটতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে গেছে। নিবিড় যোগাযোগ থাকলে এটি হতো না। দুই কৃষক আত্মহত্যা না করে যেকোনো মাধ্যমে পানি নিয়ে সমস্যার কথা জানালে তারা ব্যবস্থা নিতেন।
তিনি জানান, ঘটনার দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। পরেও তাকে দাফতরিক কাজে ঢাকায় থাকতে হয়েছে। তাই তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি। তবে আগামী শনিবার তিনি ঘটনাস্থলে যাবেন।
বিএমইডি চেয়ারম্যান এসব ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। ভুল থেকেই মানুষ শিক্ষা নেয়। পরিস্থিতিই মানুষকে সবকিছু বোঝায়। মাঠ পর্যায়ের সবকিছুই ঢেলে সাজাতে চাই।’
আলোচনার সময় বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, কোনো কোনো অপারেটর গভীর নলকূপকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। নানা অভিযোগ আসে।
অভিযোগপ্রাপ্তি ও ব্যবস্থা নেওয়ার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন থেকে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেই তাকে বাদ দেওয়া হবে। কোনো কথা শোনা হবে না। জীবন একটাই। আত্মহত্যা করতে হবে কেন? অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।
গত ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীর নিমঘুটু গ্রামের কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি বিষপান করেন। এতে তাদের মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেন তাদের পানি না দিয়ে ১২ দিন ধরে ঘোরাচ্ছিলেন। চোখের সামনে বোরো ধানের ক্ষেত ফেটে চৌচির হতে দেখে তারা আত্মহত্যা করেছেন।
এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দু’টি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ নলকূপের অপারেটর ও ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াতকে গ্রেফতার করে। সেদিনই বিএমডিএ তাকে চাকরিচ্যুতও করে। এ ঘটনায় আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি করে ঘটনা তদন্ত করছে বিএমডিএ ও কৃষি মন্ত্রণালয়।
সারাবাংলা/টিআর