সুরের মূর্ছনায় ২ বছর পর বর্ষবরণের উচ্ছ্বাস ফিরল রমনায়
১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৫৯
ঢাকা: মুছে যাক গ্লানি, ঘুছে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা— কবিগুরুর এই বাণীকে ধারণ করে পুরনো গ্লানি মুছে দিয়ে নতুন উদ্দীপনায় নতুন বছরকে বরণ করেছে বাঙালি। সব ব্যর্থতা, শোক ও হাহাকারকে বিদায় জানিয়ে গ্রহণ করেছে নতুন বছরকে। করোনাভাইরাস মহামারি পেরিয়ে সুস্থ-নির্মল পৃথিবীর প্রত্যাশা জানিয়েছে।
আজ পহেলা বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। করোনা মহামারির কারণে বৈশাখে গত দুই বছর ছিল সুনসান নীরবতা। তবে এবার সুরের মূর্ছনার চেনা আয়োজন নিয়ে রমনায় ফিরেছে ছায়ানট। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয় গান আর রাগালাপের মধ্য দিয়ে। করোনাকালে বর্ষবরণের এই সর্বজনীন উৎসব হয়ে পড়েছিল ফিকে। নিষ্প্রাণ সেই সময় পেরিয়ে আবার জমে উঠেছে রমনার বটমূল।
এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে। শেষ হয় ৮টা ৩০ মিনিটে। আয়োজনে এবার গেটের সংখ্যা ছিল আটটি। প্রবেশপথ তিনটি ছিল অরুণোদয়, রমনা রেস্তোরাঁ ও অস্তাচল। বের হওয়ার পথ দুইটি— বৈশাখী ও উত্তরায়ন। একইসঙ্গে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্যও ছিল তিনটি পথ— শ্যামলিমা, স্টার গেট ও নতুন গেট।
রমনায় দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা, সিনিয়র সিটিজেন, শিশু ও নারীদের জন্য জন্য বিশ্রামাগার। রয়েছে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ সেবা। তবে রমজান মাস হওয়ায় এবার ছিল না কোনো খাবারের দোকান।
গত বছর রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজনের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে এসে সরকার সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেয়। এ বছরও করোনা সংক্রমণ একেবারে নির্মূল না হওয়ায় আয়োজন নিয়ে শঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রমনার বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজনের সবুজ সংকেতই পাওয়া যায় সরকারের পক্ষ থেকে। সে অনুযায়ীই বঙ্গাব্দের প্রথম দিনটিতে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে রমনার বটমূল।
প্রতি বছর ১২৫ জনের মতো শিল্পী অংশ নেন ছায়ানটের এ আয়োজনে। তবে এ বছর স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় শিল্পীর সংখ্যা অল্প কয়েকজন কমিয়ে আনা হয়।
বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উপলক্ষে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদযাপনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সেজন্য সজাগ ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। রমনায় ছিল সবগুলো গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও উপস্থিতি। বসানো হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম।
করোনা মহামারি পেরিয়ে দুই বছর পর উৎসব ফিরেছে রমনায়। তবে রমজান মাসসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্ষবরণের যাবতীয় অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সারাবাংলা/এসএসএ/টিআর