Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নাম বদলে ইমাম হয়েছিলেন রমনায় বোমা হামলায় ফাঁসির আসামি শফিকুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ এপ্রিল ২০২২ ১৬:০৫

ঢাকা: নিজের নাম বদলে ছদ্মবেশে ১৪ বছর ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি শফিকুর রহমান ওরফে শফিকুল ইসলাম (৬১)।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শফিকুর রহমান রমনায় বোমা হামলা ছাড়াও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং একাধিক মামলার পলাতক আসামি। নাম-পরিচয় গোপন রেখে ২১ বছর ধরে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। দীর্ঘসময় ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতার শফিকুর রহমান নরসিংদী থাকাকালীন নিজের পরিচয় গোপন করে ‘আব্দুল করিম’ ছদ্মনামে পরিচয় দিতেন। এ ছাড়াও তিনি ওই এলাকায় আব্দুল করিম নাম ব্যবহার করে চরে অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকরি করতেন। তিনি অত্যন্ত কৌশলে মাঝেমধ্যে ভিন্ন স্থানে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা সাক্ষাৎ করতেন।

র‌্যাবের পরিচালক বলেন, ‘র‌্যাবের জঙ্গি-বিরোধী সেল বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করে জানতে পারে শফিকুর রহমান আত্মগোপনে রয়েছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ এপ্রিল কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় অভিযান চালিয়ে শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি বোমা হামলার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকার করেছে।’

তিনি বলেন, ‘২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত বোমা হামলায় ১০ জন মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হন।’

বিজ্ঞাপন

ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলাসহ অপর একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা রুজু করা হয়। হত্যা মামলাটির ২০১৪ সালের ২৩ জুন ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। অপরদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে রুজুকৃত মামলাটি বিজ্ঞ দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল-১ এ বিচারাধীন রয়েছে। উল্লেখিত হত্যা মামলার পলাতক সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব দীর্ঘদিন যাবৎ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।’

আল মঈন বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে একটি জনসভা চলাকালে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা হয়। ওই গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। এতে প্রায় তিন শতাধিক গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় একটি হত্যা ও হত্যা চেষ্টার সহযোগিতাসহ দুইটি পৃথক মামলা হয়।’

দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যাল ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মুফতি শফিকুর রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। গ্রেফতারকৃত শফিকুর রহমান ওই গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। অপরদিকে একই ঘটনায় ঢাকার মতিঝিল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অপর একটি মামলা করা হয়।

গ্রেফতার মুফতি শফিকুর রহমান বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলারও পলাতক আসামি। এ ছাড়াও ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর থানাধীন বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত এবং কমপক্ষে শতাধিক লোক আহত হন।

ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত শফিকুর রহমান কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি বলে জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার আসামি মুফতি শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় সর্বমোট ছয়টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এএম

রমনা বোমা হামলা শফিকুর রহমান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর