ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইনের উদ্দেশ্য ভূমি বিবাদের দ্রুত নিষ্পত্তি
১৬ এপ্রিল ২০২২ ১৯:৩৫
ঢাকা: ভূমি বিবাদের দ্রুত নিষ্পত্তি করাই প্রস্তাবিত ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২২ এর অন্যতম উদ্দেশ্য। এই আইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভূমির দখলগ্রহণ, বা দখলগ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতিসাধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পেশীশক্তি, দেশীয় অস্ত্র অথবা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে যে ধরনের অপরাধগুলো সংঘটিত হয় তার প্রতিরোধ ও দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিত করা হবে।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) ভূমি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই আইনের আরও দুটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি খাসভূমিসহ সরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভূমিতে প্রকৃত মালিকদের স্বত্ব ও দখলভোগ নিশ্চিত করা এবং ভূমিলিন্সু কোনো ব্যক্তির জালিয়াতি বা প্রতারণামূলক ও অন্যের সঙ্গে যোগসাজশে সৃষ্ট দলিলমূলে বা কোনো দলিল ছাড়া উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধভাবে ভূমির দখলগ্রহণ, বা দখলগ্রহণের চেষ্টা বা এর ক্ষতিসাধন রোধ করা।
এই প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী গত ১৩ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বলেছিলেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের দ্রুত আইনি প্রতিকার বা ন্যায়সঙ্গত সমাধানের ব্যবস্থা করা সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৯ তারিখে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে এর প্রাথমিক খসড়া (বিল) ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সবার মতামতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছিল।
গত ১৩ এপ্রিল বুধবার নাগরিক ও অংশীজনের মতামতের উপর আলোচনা করতে ভূমিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে উপর্যুক্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয় যেখানে বেশ কিছু সুপারিশ উঠে আসে। আলোচনার মাধ্যমে প্রাপ্ত সুপারিশগুলোর ভিত্তিতে প্রাথমিক খসড়া বিলটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংশোধিত খসড়া প্রথমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ভাষা প্রমিতীকরণের জন্য পাঠানো হবে। উক্ত প্রমিতীকৃত খসড়াটি পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর মধ্যে দিয়ে আইন প্রণয়নের পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।
ধাপগুলোর মধ্যে আছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রয়োজনে আইন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী পরিমার্জন করে সংশ্লিষ্ট বিলটি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো।
এরপরের ধাপ সংসদে বিলটি স্পিকার কর্তৃক উথাপন হওয়া। অর্থবিল না হওয়ার কারণে উত্থাপনের জন্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের দরকার হবেনা। এরপর উত্থাপিত বিলটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে, প্রয়োজনে সংসদ কর্তৃক স্থায়ী কমিটি অথবা বাছাই কমিটির কাছে বিলটি পাঠানো, এবং রিপোর্ট সহ পুনরায় সংসদে বিবেচনার জন্য তথা বিলটি পাসের জন্য পেশ করা হবে।
বিল পাস হতে হলে উপস্থিত সংসদ-সদস্যদের অধিকাংশের ভোটের প্রয়োজন। বিল পাস হওয়ার পর স্পীকার এতে স্বাক্ষর দান করবেন। এরপর বিলটি রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২’ বিলটি জাতীয় সংসদের একটি আইন হিসেবে সরকারি গেজেটে ছাপা হবে। এভাবে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন শীর্ষক বিলটি আইনে পরিণত হবে।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ