Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাংগ্রাই জলকেলিতে সাঙ্গ হলো বৈসাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ এপ্রিল ২০২২ ২০:২২

রাঙ্গামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবি’র অন্যতম উৎসব হলো মারমা জনগোষ্ঠীর জল উৎসব। আজ রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় সাংগ্রাই জল উৎসবের (জলকেলি) মধ্য দিয়ে সাঙ্গ হলো পাহাড়ের এ বছরের বৈসাবি উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হয় সাংগ্রাই ‘জলকেলি’ উৎসব। উৎসবে মারমা তরুণ-তরুণীরা দলবেঁধে জমায়েত হন এবং নাচে গানে উচ্ছাসে মাতোয়ারা হয়ে পরষ্পরের দিকে জল ছুড়ে উল্লাসে মেতে উঠে। তিন পাহাড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মারমা তরুণ-তরুণী অংশ নেয় এই আয়োজনে। সঙ্গে ছিলো নানান জনগোষ্ঠির উৎসুক মানুষও।

সকালে ‘পার্বত্য অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সংস্কৃতি বিকাশে এগিয়ে আসুন’- এই স্লোগানে মাস আয়োজিত সাংগ্রাই জল উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন সেনাবাহিনী রাঙ্গামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগডিয়ার জেনারেল ইমতাজ উদ্দিন, রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেনসহ অন্যরা।

পুরো আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মাসস সভাপতি অংসুইপ্রুচৌধুরী।

করোনার কারণে গেল দু’বছর বন্ধ ছিলো বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা। ফলে দুই বছরের বেদনা বিষাদ ভুলে এবার অনেক বেশি আনন্দে মেতে উঠেছে পার্বত্য জনপদ। মূলত সাংগ্রাই জল উৎসবের মধ্য দিয়ে প্রতিবারই পাহাড়ে বৈসাবির সাঙ্গ ঘটে। তবে বৈসাবির উৎসবের শুরু থেকে ধাপে ধাপে বিভিন্ন মারমা পল্লীতে জল উৎসব উদযাপিত হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘১২ এপ্রিল ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে যে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে আজ সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। ক্ষুদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের অনেক কিছু করার আছে, তারই অংশ হিসেবে সরকারি অর্থায়নে নানান কর্মসূচি বর্ণাঢ্যভাবে পালিত হচ্ছে।’

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গত দুই বছর করোনার কারণে উৎসব করতে পারিনি। এবছর আমাদের উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকশিত হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। পার্বত্য চট্টগ্রামের সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি অব্যাহত থাকুক এবং আশা করছি, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যেটুকু এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে বাকি অবাস্তয়িতধারাগুলো বাস্তবায়িত হবে।’

প্রসঙ্গত, কোভিডকালীন উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে গত দুবছর পার্বত্য চট্টগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, সাংক্রান, বিহু, বিষু উদযাপিত হয়নি। তবে ঘরোয়াভাবে হলেও তেমন জাকজমকপূর্ণ ছিলো না। তাই দু’বছর পর এবছর যেন উৎসবের বাড়তি আমেজে মেতেছে পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা। বিজু, বৈসুক, সাংগ্রাই, বিষু, বিহু, সাংক্রান নামে স্ব-স্ব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এই উৎসব উদযাপন করলেও উৎসবের বৈচিত্র্যকে একসঙ্গে বলা হয়ে থাকে বৈসাবি। মূলত ত্রিপুরাদের বৈসুক, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজুর প্রথম আদ্যাক্ষর ‘বৈ, ‘সা’, ‘বি’ নিয়ে বৈসাবি’র নামকরণ। যদিও পৃথক পৃথকভাবে এই উৎসবের নামকরণেই স্বস্তি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর।

সারাবাংলা/এমও

জলকেলি টপ নিউজ বৈসাবি মারমা সাংগ্রাই জলোৎসব


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর