বঙ্গোপসাগরের শুঁটকি পল্লি থেকে ৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয়
১৭ এপ্রিল ২০২২ ০৯:২৪
বাগেরহাট: বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের দুবলাসহ বিভিন্ন চরে চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে চার কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। ১ নভেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জেলে ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই রাজস্ব সংগ্রহ করেছে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগ। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় এক কোটি টাকা বেশি।
২০২০-২১ সালে এই রাজস্বের পরিমান ছিল ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। তবে মৌসুমের শুরুতে কয়েক দফা ঝড় বৃষ্টিতে মাছ নষ্ট না হলে রাজস্বের পরিমান পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেত বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাঝের কিল্লার শুঁটকি ব্যবসায়ী খুলনার ফরিদ আহমেদ এবং চট্টগ্রামের জাহির হোসেন জানান, মৌসুমের শুরুতেই ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে বহু মাছ পচে গেছে। মাছ শুকানোর মাচা, শুঁটকি রাখার ঘর উড়িয়ে নিয়ে যায় ঝড়ে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের চালান টিকবে কি না তা নিয়েও ছিল শঙ্কা। শেষদিকে সাগরের জেলেদের জালে বেশ মাছ ধরা পড়ায় তারা ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছেন।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা জেলেপল্লীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, এ বছর মৌসুমের শুরু থেকেই বেশ কয়েকবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই হাসিমুখে চর থেকে বিদায় নিয়েছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এবার শুঁটকির উৎপাদন ও রাজস্ব বেশি হয়েছে। আশা করি আগামীতেও রাজস্বের পরিমান বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সুন্দরবন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর পাড়ের দুবলা, আলোরকোল, মেহেরআলী চরসহ কয়েকটি চরে পলিথিন, কাঠ ও খড় দিয়ে অস্থায়ী তাবু করে বসবাস করেন জেলেরা। এই পাঁচ মাস প্রায় ১৫ হাজার জেলে বহদ্দর মাছ আহরণ করেন। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রক্রিয়া করে কোনো প্রকার কেমিকেল ছাড়া শুধুমাত্র রোদে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করেন তারা।
বঙ্গোপসাগরের দুবলার চর জেলেপল্লীর আওতাধীন পাঁচটি চরে শুঁটকি উৎপাদনের জন্য জেলে ও মহাজনদের থাকার জন্য ৯৮৫টি অস্থায়ী ঘর এবং ৬৬টি ডিপো ঘরের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব চরে জেলে, মহাজন ও অন্যান্য ব্যবসায়ী মিলিয়ে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ পাঁচ মাস অবস্থান করে।
সারাবাংলা/এএম