নকল পণ্য— র্যাংগসের নামে মামলা, সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ
১৭ এপ্রিল ২০২২ ২৩:৫৭
নোয়াখালী: নোয়াখালীতে র্যাংগস ইলেকট্রনিকসের শোরুম থেকে দামি ব্র্যান্ডের নামে নকল পণ্য কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। র্যাংগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জে এম একরাম হোসেনসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সফিকুল ইসলাম নাজিম (৩৮) নামে এক গ্রাহক নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক নম্বর আমলি আদালতে এ মামলা করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নুর আলম জিকু জানিয়েছেন, মামলার অন্য আসামিরা হলেন— র্যাংগস ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম, বিক্রয় ও বিপণন) জানে আলম, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (মার্কেটিং) মো. ওমর ফারুক, সনি-র্যাংগসের পরিবেশক হোসেন ইলেকট্রনিকসের মালিক কাজী মোজাম্মেল হোসেন, সনি-র্যাংগসের নোয়াখালী জোনের ম্যানেজার ফরিদ উদ্দিন ইমাম ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. শামীম হোসেন।
আইনজীবী নুর আলম জিকু বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই কোম্পানি মানুষের কাছে নকল পণ্য বিক্রি করে আসছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মধুরামপুর এলাকার বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম নাজিম অভিযোগ করলে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এ মামলার আবেদন করি। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোসলেহ উদ্দিন মিজান মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী সফিকুল ইসলাম নাজিম বলেন, অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে ২০২১ সালে ৮ মে জেলা শহর মাইজদীর র্যাংগসের পরিবেশক হোসেন ইলেকট্রনিকস থেকে মালয়েশিয়ান কেলভিনেটর কেএসভি ৩৩ এফএফ মডেলের ফ্রিজ কিনেছিলাম। বাসায় যাওয়ার পর কোথাও মালয়েশিয়ায় তৈরির কোনো মনোগ্রাম পাইনি। এরপর ফ্রিজে নানা ত্রুটি দেখা দেয়। শো-রুমে অভিযোগ দিলে তারা মাইজদী সনি-র্যাংগস কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ভুক্তভোগী সফিকুল নাজিম আরও বলেন, একই ধরনের ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল নোয়াখালীতে মামলা হয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মামলা হয়েছে। সবগুলো মামলা পিবিআইকে তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তাই নোয়াখালীসহ দেশের কোথাও যেন তারা কারও সঙ্গে এমন প্রতারণা না করতে পারে, এজন্য আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে সনি-র্যাংগসের পরিবেশক হোসেন ইলেকট্রনিকসের মালিক কাজী মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমি সনি-র্যাংগসের পরিবেশক। কোম্পানি যেভাবে প্রোডাক্ট দিচ্ছে, আমরা গ্রাহককে সেভাবেই দিচ্ছি। মামলা যেহেতু হয়েছে, এ বিষয়ে কোম্পানি জবাব দেবে। আমি কিছু বলতে পারব না।
অভিযোগের বিষয়ে সনি-র্যাংগসের নোয়াখালী জোনের ম্যানেজার ফরিদ উদ্দিন ইমাম বলেন, গ্লোবাল মার্কেটের ফলে আমরা লোকাল কারও মাল বিক্রি করতে পারি না। বাজারে এমন নামে-বেনামে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা এভাবে পণ্য বিক্রি করছে। যেহেতু মামলা হয়েছে, তাই কর্তৃপক্ষ মামলার জবাব দেবে।
এ বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ বলেন, আদালত থেকে আমাদের কাছে কাগজপত্র এলে আমরা তদন্ত করে আইন অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবো।
সারাবাংলা/টিআর
আদালতে মামলা নকল পণ্য র্যাংগের বিরুদ্ধে মামলা সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ