মোশতাককে ‘শ্রদ্ধা’: ক্ষমা চাইলেন ঢাবি অধ্যাপক
১৮ এপ্রিল ২০২২ ১৩:১৯
খন্দকার মোশতাককে শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ঘটনাকে ‘অসতর্কতাবশত’ ও ‘অনিচ্ছাকৃত’ উল্লেখ করে এর জন্য ক্ষমা ও দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমতুল্লাহ।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার অবস্থান তুলে ধরেন। একইসঙ্গে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে যেন কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
এর আগে, মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীপন্থি নীল দলের নেতা অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহ বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের জাতীয় চার নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
এ বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আলোচনা সভায় প্রতিবাদ জানান ঢাবির উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। অধ্যাপক সামাদ এই বক্তব্যের এক্সপাঞ্জ দাবি করেন।
এদিকে, সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় মুজিবনগর সরকার গঠনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা, ১০ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকার গঠন ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণসহ মুক্তিযুদ্ধকালীন এ সরকারের কর্মপরিকল্পনা এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ বিষয়ে আলোচনা করি। আলোচনাকালে মুজিবনগর সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন তা উল্লেখ করি এবং মুজিবনগর সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করি।
তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্যের এক পর্যায়ে মুজিবনগর সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কুলাঙ্গার এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তীকালে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি আমি আমার ব্যক্তিগত ঘৃণা ও ক্ষোভ প্রকাশ করি। আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব দেওয়ার সময় সর্বদা সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছি।’
তিনি আরও বলেন, আলোচনা সভায় যদি অজ্ঞতাবশত কোনো শব্দ/বাক্য উচ্চারণ করে থাকি তা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
অন্যদিকে, অধ্যাপক রহমতউল্লার এমন বক্তব্যের পর নানান মহলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে কর্মসূচিও দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সারাবাংলা/আরআইআর/একেএম