Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাওরে তলিয়েছে ২১ হাজার টন বোরো ধান!

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ এপ্রিল ২০২২ ২০:২০

ঢাকা: পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে দেশের হাওর অঞ্চলে প্রায় ৯ হাজার হেক্টর বোরো জমি আক্রান্ত। এসব জমির কোনোটি পুরোপুরি, কোনোটি আংশিক তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে অন্তত সাত হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। সে হিসাবে এ বছর হাওরে বোরো ধানের উৎপাদন কম হবে অন্তত ২১ হাজার টন।

এদিকে, হাওরে এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন পুরোদমে ধান কাটা চলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, এখন পর্যন্ত আশঙ্কার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম সারাবাংলাকে বলেন, হাওর এলাকায় ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে নেত্রকোনায় ৬৫ শতাংশ, কোথাও কোথাও ২৭ শতাংশ আবার কোথাও ২০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।

গত ১৬, ১৭ ও ১৮ এপ্রিলের ঢল নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, এই তিন দিনের পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা ছিল। তবে আশার কথা, সেই অর্থে তেমন ক্ষতি হয়নি। নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে ‍কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সবমিলিয়ে হাওর এলাকায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। আমরা ধরে নিচ্ছি ৭ হাজার হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে হিসাবে হাওরে এবার ২১ হাজার টন ধান কম উৎপাদন হতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ ১ শতাংশের কিছু বেশি।

এই ক্ষতিকে তেমন বড় কোনো ক্ষতি বলে মনে করছেন না বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক। বলেন, ‘বলা যায়— আমরা অনেকটাই রক্ষা পেয়েছি।’

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের তথ্য বলছে, দেশের ৭ জেলায় হাওরে ৪ লাখ ৫২ হাজার ১৩৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। একই এলাকার হাওর বহির্ভূত এলাকায় বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে। সব মিলিয়ে সাত জেলার ৯ লাখ ৫০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে এ বছর।

তথ্য আরও বলছে, এরই মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭২৮ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে, যা মোট আবাদের প্রায় ৩০ শতাংশ। আর হাওর বহির্ভূত এলাকায় বোরো ধান কাটা হয়েছে ১৩ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে ধান কাটা হয়েছে, যা ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সব মিলিয়ে সাত জেলায় ১ লাখ ৫০ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে, যা মোট জমির মাত্র ১৫ শতাংশ।

সরেজমিন ইউংয়ের তথ্য বলছে, কিশোরগঞ্জের হাওরে ৩০ হাজার ১৪০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এছাড়া নেত্রকোনায় ২৬ হাজার ৪৬৩ হেক্টর, ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ৬ হাজার ৮০ হেক্টর, সিলেটে ১১ হাজার ৩০২ হেক্টর, মৌলভীবাজারে ৬ হাজার ৮ হেক্টর, হবিগঞ্জে ৭ হাজার ৫০২ হেক্টর ও সুনামগঞ্জে ৫০ হাজার ২৩৩ হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়ছে।

এদিকে, হাওরের পাঁচ জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরেজমিন উইংয়ের তথ্যমতে, এই পাঁচ জেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ৮ লাখ ৮ হাজার ২০৮ হেক্টর। পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ৮ হাজার ৯১৯ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ আক্রান্ত জমির পরিমাণ ১ দশমিক এক শূন্য শতাংশ। আক্রান্ত এসব জমির কোনোটি পুরো তলিয়ে গেছে, কোনোটি তলিয়েছে আংশিক। তবে সরেজমিন উইং এখনো ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করেনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যে ধারণা দিচ্ছে, প্রকৃত হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ এরচেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো হাওর তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিন থেকেই কৃষকরা কাঁচা ধান কাটতে শুরু করে। কোথাও কোথাও আধা পাক ধান কেটে কোনোরকমে রক্ষা পাচ্ছে কৃষক। বর্তমানে এখন পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। প্রতিদিন এই ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

বোরো আবাদ হাওরে ক্ষতি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২৪ বলে ০ রানে জাকিরের লজ্জার রেকর্ড
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:১৮

সম্পর্কিত খবর