বাবার অশোভন আচরণে হলের সিট বাতিল রাবি শিক্ষার্থীর
১৯ এপ্রিল ২০২২ ১৯:০৪
রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে এক বাবা অশোভন আচরণ করায় ও উচ্চস্বরে কথা বলায় তার ছেলের হলের সিট বাতিল করা হয়েছে।
রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রোকন উদ্দিন কাইকাউসের আবাসিকতা বাতিল করেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোশতাক আহমেদ। এদিকে, সিট বাতিলের কারণ জানিয়ে উপাচার্য বরাবর এক স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তিনি।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রোকন উদ্দিন কাইকাউসকে আমার হলে (মতিহার হল) গত ২ মার্চে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হলে সিট সংকট থাকায় তাকে কিছু দিন অপেক্ষা করতে বলা হয় এবং নতুন ব্লক চালু হলে সেখানে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়। এরপর গত ৬ এপ্রিলে রোকন উদ্দিনের বাবা আমার সঙ্গে দেখা করেন এবং সিটের ব্যাপারে খোঁজ নেন। নতুন ব্লক চালু হলে সিট বরাদ্দ পাবে বলে আমি তাকে আশ্বস্ত করি।’
স্মারক লিপিতে তিনি আরও বলেন, ‘এক সপ্তাহ পর ওই ছেলের বাবা গত ১৩ এপ্রিল আমাকে ফোন দিয়ে সিট কেন দেওয়া হচ্ছে না, তার কারণ জানতে চায়। আমি তাকে বলি একটু সময় লাগবে। কিন্তু তিনি আমাকে কোনো সময় দিতে চান না, রূঢ় ভাষায় কথা বলেন এবং ফোনে অনেক উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন। তার এরূপ অশোভন আচরনে রোকন উদ্দিন কাইকাউসের মতিহার হলের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে।’
এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রোকন উদ্দিন কাইকাউস সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি খেতাবপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের (বীর বিক্রম) নাতি পরিচয় দিয়ে হলের আবাসিকতার জন্য সব কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করি। গত ২ মার্চ ১৪৬ নম্বর রুমে ট্যাগ দিয়ে আবাসিকতা নিশ্চিত করেন মতিহার হল প্রাধ্যক্ষ। পরে সেই রুমে গিয়ে দেখি মাস্টার্সের দুই ভাই আছেন। অফিসে যোগাযোগ করলে আমাকে বলে এক মাস পরে তারা চলে যাবেন তখন উঠতে পারবে। এক মাস পর গিয়ে দেখি ওই রুমে আমর পরের বর্ষের ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ সেশনের দুই ছেলেকে উঠানো হয়েছে।’
রোকন উদ্দিন বলেন, ‘পরে প্রভোস্ট স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি বলেন, এক সপ্তাহর মধ্যে তোমাকে অন্য রুমে তুলে দিব। এক সপ্তাহ পরে যোগাযোগ করলে তিনি সরাসরি নাকচ করে দেন। এবং অফিস থেকে আমাকে জানানো হয় কার্ড জমা দিয়ে ভর্তির টাকা ফেরত নিয়ে যেতে।’
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে প্রাধ্যক্ষের সাথে কথা বলে বোঝা যায় যে, মুক্তিযোদ্ধার প্রতি তার ক্ষোভ রয়েছে। আমার দাদা মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ায় তিনি বিদ্বেষ পোষণ করে সিট বাতিল করেন, যা হতাশাজনক। তাছাড়াও এটি নিয়ম বহির্ভূত এবং পক্ষপাত ও উদ্দেশ্যমূলক।’
আবাসিকতা বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘প্রভোস্টের এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে যদি কেও শৃঙ্খলাভঙ্গের মতো কাজ করে বা প্রভোস্টের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে শুধু সিট বাতিল কেন, ছাত্রত্বও বাতিলের সুপারিশ করতে পারেন।’
সারাবাংলা/পিটিএম