চুয়াডাঙ্গায় দুর্নীতির অভিযোগে প্রকল্প কর্মকর্তা কারাগারে
২০ এপ্রিল ২০২২ ১৬:১১
চুয়াডাঙ্গা: দুর্নীতির অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনসহ দু’জন কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি বেশ গোপনীয়তা অবলম্বন করা হলেও অবশেষে তা ফাঁস হয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, ঢাকা দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (মানি লন্ডারিং) আব্দুল মাজেদ বাদী হয়ে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ নম্বর মামলাটি করেন। ২০০টি ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও জনগণের নামে ৬০০ মেট্রিকটন চাল কাজ না করেই আত্মসাৎ করার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়। যার মূল্য ২ কোটি ১৮ লাখ ১ হাজার ৩০০ টাকা। দণ্ডবিধি ৪০৯/৪৬৬/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা মোতাবেক দায়ের করা এ মামলার আসামি রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার সজ্জনকান্দা (বড়পুল) গ্রামের মরহুম আমজাদ হোসেনের ছেলে তৎকালীন জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন এবং জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের মরহুম আমির হোসেন মালিকের ছেলে বর্তমানে জীবননগর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর সাইফুর রহমান মালিক।
এ মামলার আসামিদের চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির না হয়ে উচ্চ আদালতে জামিনে ছিলেন। গত ২০২২ সালের ২৭ মার্চ বিশেষ আদালতের বিচারক জিয়া হায়দারের আদালতে জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর হয়। মামলার ৪ নম্বর আদেশে তাদের চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ২০২২ সালের ১০ মে পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়। এরপর ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক (অনুঃ ও তদন্ত) ফারজানা ইয়াসমিন অভিযুক্তদ্বয়ের বিরুদ্ধে এজাহার করার অনুমোদন দেন।
বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন দুর্নীতির মামলায় কারাগারে গেলেও বিষয়টির ক্ষেত্রে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে ওই কাজে জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাকে ওই কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে থাকায় দাফতরিক কাজে বিঘ্ন ঘটতে থাকে। এরই ফলে ক্রমান্বয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা আশরাফ হোসেনের কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার সাদাত হোসেন জানান, প্রকল্প কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন কারাগারে যাওয়ার পর গত ২৮ মার্চ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর চিঠির মাধ্যমে তা জানানো হয়। এরপর গত ৩০ মার্চ এক চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ওই স্থানে জীবননগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়। এক্ষেত্রে গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়নি। প্রথাগতভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এনএস