আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশের ইট ভাটা ভেঙে দেওয়ায় জনমনে স্বস্তি
২০ এপ্রিল ২০২২ ২৩:৪৯
গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশে থাকা পরিবেশ দূষণকারী ইট ভাটা অপসারণ করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে ভাটার চিমনিটি ধ্বংস করে যাবতীয় মালামাল অপসারণ করেছেন ভাটা মালিক। ভাটাটি পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হওয়ায় সেটি বন্ধ করায় স্বস্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মাঝে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে বগুড়ার এক ব্যবসায়ী বিটিবি নামের এই ভাটা স্থাপন করেন। সরকারি অনুমোদন ও পরিবেশের ছাড়পত্র না নিয়েই বসতি এলাকায় কৃষি জমিতে ভাটা নির্মাণ করা হয়েছিল। ভাটা নিয়ে শুরু থেকেই এলাকাবাসীর আপত্তি থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে ভাটার মালিক এর কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। এমনকি ভাটার পাশে থাকা ১০৪ শতাংশ সরকারি জায়গা দখল করে ভাটার কাজে ব্যবহার করতে থাকেন। বছরখানেক আগে আবু রায়হান নামের এক ব্যক্তি ভাটাটি কিনে নিয়ে একইভাবে কার্যক্রম অব্যহত রাখেন।
ইট ভাটার মাধ্যমে জমি দখলের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানতে পেরে ভাটার দখলে থাকা খাস জমি উদ্ধার করে সেখানে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ শুরু করেছে। এই আশ্রায়ন প্রকল্পে ৩২টি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ২৮ মে উদ্বোধনের পর ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় বসবাসকারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপজেলা প্রশাসন অনুমোদনহীন ইট ভাটার বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরকে অবহিত করে। পরে গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) স্থানীয় প্রশাসনের অভিযানে ভাটার মালিক আবু রায়হন চিমনিটি ভেঙে ফেলে যাবতীয় মালমাল অপসারণ করে নিতে বাধ্য হন।
স্থানীয়রা বলছেন, ভাটাটি বন্ধ করে উপজেলা প্রশাসন একটি ভালো কাজ করেছে। কেবল আশ্রয়ন প্রকল্প নয়, ভাটা অপসারণের মাধ্যমে স্থানীয় অধিবাসী সবার স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
ভাটার মালিক আবু রায়হান বলেন, পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে ভাটাটি অপসরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফ হোসেন বলেন, ভাটার পরিবেশ দূষণের বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। সুবিধাভোগীরা আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাস শুরু করলে ভাটাটি অপসারণ করা হবে, এমন একটি সিদ্ধান্ত ছিল। তবে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে দ্রুত ভাটাটি ভেঙে ফেলা হলো।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান বলেন, অনুমোদন না নিয়ে ভাটাটি স্থাপন করা হয়েছিল। সে কারণে পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে ভাটাটি ভেঙে দিয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের চারপাশ এখন মুক্ত। বসবাসের ক্ষেত্রে ভাটার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকবে না। জেলায় অনুমোদনহীন এরকম আরও ভাটা থাকলে সেগুলোও ভেঙে দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/টিআর