Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পুলিশ অনেক সময় ঘুষ নিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ এপ্রিল ২০২২ ০০:০৪

ঢাকা: পুলিশ অনেক সময় ঘুষ নিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ না করে আপস করে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাল্যবিয়ে বন্ধে কাজ করতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন বলে জানিয়েছেন কেয়ার বাংলাদেশের তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা। এ ক্ষেত্রে দোষী পুলিশ সদস্যদের আইনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

নারী আন্দোলন বিষয়ে কেয়ার বাংলাদেশ— এর তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মতবিনিময় সভায় আগত স্বেচ্ছাসেবকরা এ সব কথা বলেন। এ সময় তারা মেয়েদের এগিয়ে চলার পথ সুগম করতে পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও ধর্মান্ধতা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের আনোয়ারা বেগম-মুনিরা খান মিলনায়তনে নারী আন্দোলন বিষয়ে কেয়ার বাংলাদেশ এর তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মুক্ত আলোচনায় কেয়ার বাংলাদেশ এর তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা বাল্যবিয়ে ও জেন্ডার বৈষম্য প্রতিরোধে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কাজের চ্যালেঞ্জ ও অর্জন সম্পর্কে আলোচনা করেন। তারা বলেন, ‘পরিবার ও সমাজে মেয়েদের প্রতি এখনও অনেক বৈষম্যমূলক পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। আমরা মেয়ে সবসময় কেবল এটিই মনে করানো হয়। মেয়েরদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। অনেক সময় দারিদ্র্যের কারণে ও বিয়ের পরেও পড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।

বিজ্ঞাপন

মালেকা বানু বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে কেয়ার বাংলাদেশ এর স্বেচ্ছাসেবীদের সম্পৃক্ততা করার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিতে কেয়ার বাংলাদেশ এর সক্রিয় ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

কেয়ার বাংলাদেশ এর পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপনকালে অ্যাক্টিং ডিরেক্টর (উইমেন অ্যান্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট) রওনক জাহান বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ও মেয়েদের প্রতি সমাজের প্রচলিত জেন্ডার বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে চলমান Tipping Point Initiative প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করেন।

তিনি এ সময় বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কিশোরীরা কাজ করছে। নারী আন্দোলনের সঙ্গে তরুণীদের যোগসূত্রিতা তৈরির জন্য আজকের সভার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেন প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও ভবিষ্যতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।’

সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তরুণদের অভিজ্ঞতাকে নারী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আইন সংস্কার নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রশিক্ষণ ও কাজের সুযোগ সৃষ্টি, নারী চলাফেরা ও পোশাককে টার্গেট করে তৈরি হওয়া বাধা নির্মূলের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলনের একটা অর্জন হচ্ছে— আজ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েরাও ভাবতে শিখেছে তাদের মানুষ হিসেবে বাঁচতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা হচ্ছে স্থায়ী উন্নয়নের মূল ভিত্তি একথার সত্যতা আজ দৃশ্যমান।’

সংগঠন সম্পর্কে আলোচনা উপস্থাপনকালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি স্বেচ্ছাসেবী গণ নারী সংগঠন হিসেবে নারীর মুক্তি ও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৫২ বছর ধরে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করছে। এ সময় তিনি নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পরিচালিত করতে সংগঠনের বিভিন্ন উপপরিষদের কাজগুলো সম্পর্কে আলোচনা করেন।’

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, কেয়ার বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম। মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ নেন কেয়ার বাংলাদেশ এর তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সুমাইয়া সিদ্দিকী, খাদিজা আক্তার মুনমুন, পপি আক্তার, শম্পা আক্তার, ফারজানা আক্তার, সুমাইয়া আক্তার, সাদিয়া আক্তার, পলি রানী, অর্পিতা বসুনিয়া, সাবিনা ইয়াসমিন, সামিয়া আজম, সুমী ইয়াসমিন ও রেনেকা আহমেদ অন্তু।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

কেয়ার বাংলাদেশ বাল্যবিয়ে মহিলা পরিষদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর