ডলার ও গিফটের নামে প্রতারণা: ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তাসহ আটক ১২
২১ এপ্রিল ২০২২ ১৬:১৫
ঢাকা: ডলার ট্রিক, বিদেশি বন্ধু হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট এবং গিফট স্ক্যামের অভিযোগে বাংলাদেশি ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তাসহ ১২ বিদেশিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ডলার ট্রিক মেশিন, ১৭টি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ, কেমিক্যালের বোতল এবং বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টের কপি জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের দাবি, গ্রেফতার সবাই একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। প্রথমে বন্ধু হয়ে এরপর নানান কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিত চক্রটি।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আকতার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি ভুয়া কাস্টমস কর্মকর্তা হলেন চাঁদনী আক্তার। বাকী সবাই বিদেশি। এর মধ্যে চক্রটির প্রধান হিসেবে কাজ করেন নাইজেরিয়ান নাগরিক হেনরি ওসিতা ওকেচুকু এবং চিসম ইমানুয়েল। এই দুই জনই মূলত বাংলাদেশি সহযোগীদের সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখা এবং অ্যাকাউন্ট ম্যানেজারের সঙ্গে সমন্বয়, প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতকৃত টাকা গ্রহণ ও প্রতারক চক্রের মধ্যে বন্টনের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। তারা কাস্টমস কর্মকর্তার কাজের জন্য বাংলাদেশি মহিলা সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ও প্রতারণার কাজে নিয়োজিত করার দায়িত্ব পালন করে। অন্যান্য বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদেরকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় এবং মেসেজ রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে পূর্ব পরিকল্পিত সুন্দর আকর্ষণীয় কথোপকথনের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে। চক্রের হোতাদের মাধ্যমে সমন্বয় করে প্রতারণা করে থাকে। প্রাথমিকভাবে ওকেচুকু’র ডিভাইসে পাঁচটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং চিসমের ডিভাইসে ৩২টি ফেসবুকের অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।
মূলত তিনটি উপায়ে প্রতারণা
উপহার বা পার্সেল প্রতারণা, ব্যবসায়িক পার্টনার এবং বিনিয়োগের কথা বলে প্রতারণা ও ডলার ট্রিক বা ডলার ব্যবহার উপযোগী করার মেশিন দেখিয়ে প্রতারণা করে থাকে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, প্রতারণার পাশাপাশি বিশেষত এই আফ্রিকান নাগরিকরা ভিজিট এবং বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসে পরবর্তীতে অবৈধভাবে অবস্থান করে। মাদকদ্রব্যের আন্তর্জাতিক চোরাচালানসহ মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, অন্যান্য অবৈধ দ্রব্য চোরাচালানের কাজ করে। অপরাধমূলক কার্যক্রমে প্রাপ্ত অর্থ তারা হুন্ডির মাধ্যমে নিজের দেশে পাচার করে থাকে। তারা যে সকল এলাকায় বসবাস করে অনেক ক্ষেত্রে বসবাসের স্থানের পরিবেশ নষ্ট করে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিশৃংখল আচরণ করে থাকে। অনেক বাড়ির মালিক বেশি ভাড়ার আশায় তাদেরকে বাসা ভাড়া দিলেও অনেক ক্ষেত্রে এ সকল প্রতারকরা বেশি ভাড়া দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক মাস বাসা ভাড়া বকেয়া রেখে কৌশলে বাসা পরিবর্তন করে থাকে। এছাড়াও এ সকল প্রতারকরা বিভিন্ন বাংলাদেশি মেয়েদেরকে অল্প সময়ের জন্য বিয়ের কথা বলে তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং পরবর্তীতে তাদেরকে ছেড়ে চলে যায় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম