Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রকৃত’ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য আগাম নির্বাচনের ডাক ইমরানের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ এপ্রিল ২০২২ ১০:৫৫

‘প্রকৃত’ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনের জন্য গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন পাকিস্তানের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একইসঙ্গে তারা ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে ‘যারাই ভুল করে থাকুক না কেন’, আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে সেই ভুল সংশোধন করে তাদের বার্তা দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) এই নেতা।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) পাকিস্তানের লাহোরের গ্রেটার ইকবাল পার্কের এক জনসভায় ইমরান খান এসব কথা বলেন। ডনের খবরে বলা হয়, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ঢল নেমেছিল ইমরানের এ জনসভায়। উপস্থিত জনতা জনসভায় বিদেশি হস্তক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে ইমরান খানের পক্ষে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেন।

বিজ্ঞাপন

বিকেলের পর থেকেই ইকবাল পার্কে জড়ে হতে থাকেন ইমরান খানের সমর্থকরা। ইমরান খান মঞ্চে আসেন ইফতারের পর। আগের মতোই তিনি বর্তমান সরকারকে বিদেশিদের বসানো সরকার বলে অভিহিত করেন। বলেন, আমরা কখনোই এরকম বিদেশিদের বসানো একটি সরকারকে মেনে নিতে পারি না।

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) ও আসিফ আলি জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সমর্থকসহ পাকিস্তানি সব নাগরিককে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ইমরান খান। বলেন, ‘বিদেশি মালিকদের দাসত্ব’ থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আপনারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিন। আমি ডাকলেই সবাই ইসলামাবাদে (পাকিস্তানের রাজধানী) হাজির হবেন।

ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আমার আস্থা রয়েছে। আপনাদের কারও সঙ্গে আমরা কোনো সংঘর্ষে জড়াতে চাই না। কিন্তু আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু হতে যাচ্ছে। এই আন্দোলনে আমরা সবাইকে পাশে চাই।

বিজ্ঞাপন

প্রকৃত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনের জন্য আগাম নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত জনতা আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকবে— জনসভায় উপস্থিত জনতাকে এমন শপথও করান ইমরান খান।

শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিদেশিদের ক্রীড়নক বলে অভিহিত করেন ইমরান খান। এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার স্থাপনের জন্য আগাম নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। ইদুল ফিতরের পর এই লক্ষ্যে পিটিআই তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের অভিযোগ তুলে ইমরান খান ও তার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল বিরোধী দলগুলো। তবে গত ৩ এপ্রিল নাটকীয়ভাবে এই অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার। এর পরপরই ইমরান খানের পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের রাজনীতিতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। পরে অবশ্য অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের প্রক্রিয়াটির বৈধতার প্রসঙ্গ গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে।

গত ৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। সংসদও পুনর্বহালের রায় দেন আদালত। অনাস্থা প্রস্তাবটি ৯ এপ্রিল ভোটে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ৯ এপ্রিল মধ্যরাতে সেই অনাস্থা প্রস্তাবে ৩৪২ আসনের পার্লামেন্টে ১৭৪ জন সদস্য ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দিলে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান।

একদিন পর ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। পিএমএল (নওয়াজ) দলের পক্ষ থেকে শাহবাজ শরিফ ও পিটিআই থেকে শাহ মাহমুদ কুরেশি এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে শনিবার সংসদ অধিবেশন শুরু হলে পিটিআইয়ের সব সংসদ সদস্য গণপদত্যাগ করলে শাহবাজের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভোটে পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন দেশটিতে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ।

ওই দিনের পর থেকেই ইমরান খান ও তার দল পিটিআই আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের দাবি, বর্তমান সরকার বিদেশি কোনো ‘প্রভু’র ইন্ধনে ক্ষমতা পাওয়া পুতুল সরকার।

সারাবাংলা/টিআর

আগাম নির্বাচন ইমরান খান টপ নিউজ তেহরিক ই ইনসাফ পিটিআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর