Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদ্মাসেতুর টোল নিয়ে সমালোচনা, সমাধান প্রধানমন্ত্রীর হাতে

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ এপ্রিল ২০২২ ১৪:৩০

ঢাকা: ৩০ জুনের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে পদ্মাসেতুর। এর পরপরই যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে স্বপ্নের এই সেতুটি। তবে এরই মধ্যে এই সেতুতে যানচলাচলের জন্য সেতু বিভাগ থেকে যে টোল প্রস্তাবনা এসেছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনা। টোল প্রস্তাবনায় দেখা যায়, ফেরি পারাপারের জন্য যে পরিমাণ টোল দিতে হচ্ছে যানবাহনকে, পদ্মাসেতুর জন্য টোল ধরা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এ নিয়েই অসন্তোষ জানাচ্ছেন অনেকে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা সেতুতে চড়তে হলে কেন এত টোল দিতে হবে— এমন প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।  বলছেন, টোল দিতে হলেও সেটি ফেরির চেয়ে বেশি কেন?

বিজ্ঞাপন

সেতু বিভাগ বলছে, পদ্মাসেতুর জন্য যে টোলহারের প্রস্তাব তারা করেছেন, এটি চূড়ান্ত কিছু নয়। এটি প্রাথমিক একটি প্রস্তাবনা। এ বিষয়ে চূড়ান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার হাত ঘুরে আসার পর আর কারও কোনো অভিযোগ থাকবে না।

সেতু বিভাগ থেকে পদ্মাসেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য যে টোল হার প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে দেখা যায়— মোটরসাইকেল পারাপারে টোল দিতে হবে ১০০ টাকা, যা ফেরিতে দিতে হয় ৭০ টাকা। কার ও জিপের টোল ধরা হয়েছে ৭৫০ টাকা (ফেরিতে ৫০০ টাকা), পিকআপের টোল ১২০০ টাকা (ফেরিতে ৮০০ টাকা), মাইক্রোবাসের জন্য ১৩০০ টাকা (ফেরিতে ৮৬০ টাকা)।

এছাড়া ছোট বাস পারাপারে টোল ধরা হয়েছে ১৪০০ টাকা (ফেরিতে ৯৫০ টাকা), মাঝারি বাসের জন্য ২০০০ টাকা (ফেরিতে ১৩৫০ টাকা), বড় বাসের টোল ২ হাজার ৪০০ টাকা (ফেরিতে ১৫৮০ টাকা), ৫ টন পর্যন্ত ছোট ট্রাকের টোল ১৬০০ টাকা (ফেরিতে ১০৮০ টাকা), মাঝারি ট্রাকের টোল ২১০০ টাকা (ফেরিতে ১৪০০ টাকা), ৮ থেকে ১১ টনের মাঝারি ট্রাকের টোল ২৮০০ টাকা (ফেরিতে ১৮৫০ টাকা) এবং থ্রি এক্সেল পর্যন্ত ট্রাকের টোল ধরা হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা (ফেরিতে ৩৯৪০ টাকা)।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুর মূল দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার ভায়াডাক্টসহ (দুই প্রান্তের উড়ালপথ) সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত এই টোল সেতু চালুর ১৫ বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে। প্রতি ১৫ বছর পরপর টোলের হার ১০ শতাংশ করে বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

পদ্মাসেতুর টোল প্রস্তাব নিয়ে সমালোচনার মুখে সেতু বিভাগ বলছে— এটি নিছক প্রাথমিক প্রস্তাবনা, বাস্তব নয়। এখনো অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ঘুরে এই প্রস্তাব পাস হবে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে সেতু বিভাগের যুগ্ম সচিব রহিমা আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি প্রস্তাব প্রাথমিকভাবে তৈরি করা হয়েছে। এটি খসড়া। অনুমোদনের জন্য কয়েকটি মন্ত্রণালয় ঘুরে যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী সবকিছু বিবেচনা করে নির্ধারণ করে দেবেন সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করা কোন যানবাহনের টোল আসলে কত হবে?’

ফেরির তুলনায় সেতুতে কেন বেশি টোল দিতে হবে— এ প্রশ্নের উত্তরে যুগ্ম সচিব বলেন, ‘একটি প্রস্তাব তৈরি করা হলেও সেটি নানা বিষয় মাথায় নিয়ে করা হয়। সেতু রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে নানা খরচ রয়েছে, সেগুলো মাথায় রাখতে হবে। এত বড় একটি সেতু, সেখানে সবকিছু মাথায় রেখে এবং সব বিষয় ঠিক রেখে কাজ করা হচ্ছে। যখন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চূড়ান্ত হয়ে আসবে, আশা করি তখন আর কোনো সমস্যা কিংবা সমালোচনা থাকবে না।’

সেতু বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘৩০ জুনের মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সেতুর সব কাজ শেষ করার কথা জানিয়ে দিয়েছি। সেজন্য টোল আদায় করা এবং টোল আদায়কারী ও সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই কাজটি পেয়েছে কোরিয়া এক্সপ্রেস করপোরেশন (কেইসি) ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি)। আশা করা হচ্ছে— জুলাই থেকে সেতুতে টোল দিয়ে যানচলাচল শুরু হবে।’

এর আগে, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মাসেতু। এরপর পর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। পদ্মাসেতু প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

সারাবাংলা/এসজে/এএম/টিআর

টোল পদ্মাসেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর