ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
২৩ এপ্রিল ২০২২ ১০:৫৫
ঢাকা: পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল আটটা থেকে দেশের সকল কাউন্টার ও অনলাইনে একসঙ্গে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। টিকিট পেতে মধ্যরাত থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন যাত্রীরা। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছে পুলিশ, র্যাব ও রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) দেশের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে স্টেশন রাজধানীর কমলাপুরে গিয়ে দেখা গেছে, দাঁড়ানোর জায়গা নেই। ভিড় ঠেলে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। অনেকেরই অভিযোগ সকালে অনলাইনে টিকেট না পেয়ে ছুটে এসেছেন টিকিট কাউন্টারে। এখানেও তিন ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
কথা হয় টিকিট কিনতে আসা রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমার বাড়ি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। গত দুই বছর ইদ করতে পারিনি। এবার পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে ইদ করার ইচ্ছা। ভোররাতে সেহরি খেয়েই কাউন্টারে এসে দাঁড়িয়েছি। তিন ঘণ্টায়ও টিকিট সংগ্রহ করতে পারিনি। এখান থেকে সকালে অফিস করার কথা রয়েছে। কিন্তু টিকিট কাটার পর অফিসে পৌঁছানো যাবে কী না সন্দেহ।
টিকিট প্রত্যাশী আরেকজন মাহমুদা শিলা সারাবাংলাকে বলেন, ভেবেছিলাম মেয়েদের কাউন্টারে ভিড় কিছুটা হলেও কম হবে। কিন্তু তা হয়নি। দুই ঘণ্টায় কাউন্টারের নাগাল পাইনি। আশা করছি টিকিট পাব। তিনি বলেন, ২৮ এপ্রিল তিনি রাজশাহী ভ্রমন করবেন।
ঘরমুখো মানুষের ইদ যাত্রার আগাম টিকিট পেতে মানুষের ঢল নেমেছে কমলাপুরে। সকাল থেকে লাইনে চাকরিজীবীদের দেখা গেলেও ১০টার পর থেকে বেশিরভাগই শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে। সকলে দীর্ঘসময় ধরে লাইনে অপেক্ষা করছেন। অপেক্ষা করতে করতে অনেকেই বসে পড়েছেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইদের সম্ভাব্য দিন আগামী ৩ মে ধরে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেলওয়ে। সেই হিসেবে ২৩ এপ্রিল শনিবার বিক্রি হচ্ছে ২৭ এপ্রিল ভ্রমণের টিকিট, ২৪ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৮ এপ্রিলের টিকিট, ২৫ এপ্রিল বিক্রি হবে ২৯ এপ্রিলে ভ্রমনের টিকিট। ৩০ এপ্রিল যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটতে হবে ২৬ এপ্রিল, ১ মে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটতে হবে ২৭ এপ্রিল।
অন্যদিকে ইদ শেষ করে ফিরে আসার জন্য ১ মে থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ৫ মে যাতায়াতের টিকিট পাওয়া যাবে ১ মে, ৬ মে যাতায়াতের টিকিট কাটতে হবে ২ মে, ৭ মে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটতে হবে ৩ মে, ৮ মে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটতে হবে ৪ মে। ২, ৩ এবং ৪ মে টিকিট বিক্রি হবে চাঁদ দেখার ওপরে নির্ভর করে। কাউন্টার ও অনলাইনে একসঙ্গে সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। বিক্রি করা টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না। আবার ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ট্রেনের আসন অনলাইনে পাওয়া যাবে না। একেকজন যাত্রী ৪টির বেশী টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন না। কোনো যাত্রী জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে না বলে রেলওয়ে থেকে জানানো হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের ঘরে ফেরা নির্বিঘ্ন করার পাশাপাশি যাতে কাউন্টারে ভিড় না হয়, সেজন্য রাজধানীর পাঁচ স্থান থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সকল পশ্চিমাঞ্চলগামী ও খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে কমলাপুর স্টেশন থেকে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সকল আন্তনগর ট্রেনে টিকিট পাওয়া যাবে বিমানবন্দর কাউন্টার থেকে, ময়মনসিংহ, জামালপুরগামী ও দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালসহ সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে তেঁজগাও কাউন্টারে, মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে ক্যান্টনমেন্ট কাউন্টার থেকে আর সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সকল আন্তঃনগরগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে। এই পাঁচটি কেন্দ্র থেকে ঈদ উপলক্ষে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।
সারাবাংলা/জেআর/এএম