১৫ মিনিটেই শেষ ট্রেনের এসি টিকিট
২৪ এপ্রিল ২০২২ ১২:১৫
ঢাকা: আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাউন্টারগুলোর দ্বিতীয় সারির পঞ্চাশ জন টিকিট প্রত্যাশীর পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর। রংপুরগামী নীলসাগরের এসি সিটের টিকিট কাটার উদ্দেশে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়ার পনেরো মিনিট পরেই কাউন্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এসি টিকিট হচ্ছে না।
তখনও সামনে জনা বিশেক দাঁড়িয়ে। এ ঘোষণা শোনার পর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সকলের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়ে গেল। পনেরো মিনিটেই টিকিট শেষ হলো কেন? প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন সীমিত থাকার কারণেই এই পরিস্থিতি হয়েছে।
রোববার (২৪ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে।
ডেমরা থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাটতে আসা সোহেল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেহরি খেয়েই টিকিটের জন্য চলে এসেছি। পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। টানা দুই বছর পর এবার ইদে পরিবার পরিজন নিয়ে খুলনার বাগেরহাটে ইদ করার ইচ্ছা আছে।’
তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এত দূরের পথে ভ্রমণ করা কঠিন বলেই এসি আসন দরকার। কিন্তু বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণ পর জানিয়ে দেওয়া হলো টিকিট নেই।’
টিকিট নিতে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকা ইশরাত জাহান বলেন, ‘মাকে নিয়ে দিনাজপুর যাবো। তিনি অসুস্থ বলে বাসে ভ্রমণ করা সম্ভব নয়। এসি টিকিট কাটতে এসে দেখি শেষ হয়েছে।’ এমন অভিযোগ শত টিকিট প্রত্যাশীর।
রোববার (২৪ এপ্রিল) দ্বিতীয় দিনের মতো ইদ উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। এদিনও দ্রুত এসি টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় মানুষ শোভন চেয়ারের টিকিট কাটছেন।
এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, প্রতিদিন যে টিকিট বিক্রি হয় তার অর্ধেক অনলাইনে ৫০ আর অফলাইনে ৫০ শতাংশ অর্থাৎ কাউন্টার থেকে সরাসরি টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমাঞ্চলের সব টিকিট কমলাপুর থেকে দেওয়া হয়। যাত্রীরা যেন দ্রুত টিকিট কাটতে পারে সে জন্য আমরা অতিরিক্ত কাউন্টার খুলেছি। মেয়েদের জন্য দুইটি কাউন্টার রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির টিকিটগুলো সীমিত থাকে। ওই টিকিটগুলোর অর্ধেক চলে যায় অনলাইনে। যে ৫০ শতাংশ টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হয়, ফলে তা দ্রুত শেষ হয়ে যায়। এ নিয়ে যাত্রীদের মনক্ষুণ্ন হলেও কিছু করার থাকে না।’
এদিকে ইদে ট্রেনের টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ভ্রমণে ইচ্ছুক যাত্রীরা। ফলে তারা সরাসরি টিকিট কাটতে ছুটে এসেছেন কমলাপুরে। কেউ কেউ লাইনে দাঁড়িয়েই অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করছেন।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ সারওয়ার বলেছেন, ‘অনেকেই অভিযোগ করেছেন সকাল থেকে অনলাইনে টিকিট কাটতে পারছেন না। যদিও এখন সেটি স্বাভাবিক হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া মাত্র আমরা সহজ ডটকমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে, সকলে একসঙ্গে সকাল ৮টায় লগইন করার কারণে সাইবার জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই সময়ে অনেকে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার আমরা টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করে টিকিট বিক্রি করছি। প্রথম দিনে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হলেও দ্বিতীয় দিনে টিকিট প্রত্যাশীরা সহযোগিতা করছেন। সবাই এনআইডি দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন।’
সারাবাংলা/জেআর/একে