Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি পণ্য যাবে চীনে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২২ ২১:০৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইতালির পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে চীনে সরাসরি পণ্য পরিবহন শুরু হচ্ছে চলতি সপ্তাহে। ইউরোপের বৃহত্তম রটার্ডাম বন্দরে সরাসরি জাহাজ চলাচলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমেরিকায়ও সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিশ্বের আরও কয়েকটি বন্দর সরাসরি পণ্য পরিবহনের সুযোগ চেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে।

রোববার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেছেন, ‘সরাসরি জাহাজ পরিচালনের কারণে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। রফতানি খাতে বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সরাসরি জাহাজ পরিবহনে এখন সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রীতি অনুযায়ী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরের মুন্সি ফজলুর রহমান অডিটরিয়ামে এ সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে বন্দরে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাও ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনার ক্রান্তিকাল কাটিয়ে ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ কন্টেইনার, কার্গো ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার টিইইউস হ্যান্ডলিং হয়, প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। ১১ কোটি ৬৬ লাখ মেট্রিক টন পণ্য হ্যান্ডলিং করে, প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ শতাংশ। ৪ হাজার ২০৯টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়।

ক্রমবর্ধমান হ্যান্ডলিং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বন্দর চেয়ারম্যান।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, বছরে সাড়ে ৪ লাখ টিইইউ’স কনটেইার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দরের ১ হাজার ২২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৬০০ মিটার জেটিতে একসঙ্গে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের তিনটি কনটেইনার জাহাজ ও ২২০ মিটার লম্বা ডলফিন জেটিতে একটি তেলবাহী জাহাজ ভিড়ানো যাবে। আগামী জুলাইয়ে পিসিটির কার্যক্রম শুরু হবে।

২০১২ সালে হাতে নেওয়া কম্পিউটারাইজড কন্টেইনার টার্মিনাল ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম (সিটিএমএস) প্রকল্পের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করে। প্রকল্পটি আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে টার্মিনাল অপারেটিং সিস্টেসে (টিওএস) রূপান্তর করা হয়েছে। ফলে এ বন্দর বিশ্বের আধুনিক বন্দরগুলোর মতো নিরবিচ্ছিন্ন অপারেশনাল অটোমোশন সেবা নিশ্চিত করতে পারবে। বর্তমানে ইলেক্ট্রনিক ডেলিভারি সিস্টেম চালু হওয়ায় ব্যবহারকারীরা ঘরে বসে বিল পরিশোধ করতে পারছেন।

‘চট্টগ্রাম বন্দর এখন অটোমেটেড বন্দরে রূপান্তরিত হয়েছে, এখন এটিকে পেপারলেস বন্দরে পরিণত করতে হবে।’- বলেন বন্দর চেয়ারম্যান

বন্দরের প্রবৃদ্ধির গতি বাড়ানোর প্রকল্প হিসেবে উল্লিখিত পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল ও বে-টার্মিনাল নিয়েও বিভিন্ন তথ্য দেন বন্দর চেয়ারম্যান।

তিনি জানান, গত ৩০ মার্চ মাতারবাড়ি বন্দরের ২৮৩ দশমিক ২৭ একর জমি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হবে। মাতারবাড়ি বন্দরে ১৮ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে মাইলফলক হিসাবে কাজ করবে।

অন্যদিকে বে-টার্মিনাল প্রকল্পের ৬৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। আরও ৮০৩ একর জমি প্রতীকী মূল্যে নিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, করোনার সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে জাহাজজট হলেও চট্টগ্রাম বন্দর ছিল স্বাভাবিক। ফলে সারচার্জ আরোপ হয়নি। এতে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দর ও শিপিং কোম্পানিগুলো চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আজকের বন্দর বিগত দিনের চেয়ে আরও বেশি কর্মক্ষম এবং আগামী বন্দর হতে যাচ্ছে আরও আকর্ষণীয় সমৃদ্ধ এবং আরও বেশি কার্যকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে কন্টেইনারবাহি ৫০ শতাংশ জাহাজ অপেক্ষা ছাড়াই জেটিতে ভিড়তে পারছে।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান, সদস্য (অর্থ) কামরুল আমীন, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, পরিচালক (পরিবহন) মো. এনামুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

চট্টগ্রাম বন্দর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর