ইদের আগেই ইদ আনন্দ, ঘর পাচ্ছে ৩৩ হাজার পরিবার
২৪ এপ্রিল ২০২২ ২২:১৭
ঢাকা: মুজিববর্ষের প্রতিশ্রুত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে পবিত্রতা ইদুল ফিতরের আগে প্রায় ৩৩ হাজার, ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘরসহ বাড়ি পাচ্ছে। যারা ঘর পাচ্ছেন, তাদের মাঝে যেন এবার যেন ইদের আগেই ইদ আনন্দ।
রোববার (২৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান (যুগ্ম সচিব)।
ব্রিফিংয়ে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর পাচ্ছেন গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষরা। আগামী ২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে দেশের চারটি উলজেলায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গৃহহীন মানুষের হাতে উপহারের এসব ঘর হস্তান্তর করবেন। এই পর্যায়ে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ইদের আগে উপহারের ঘরে উঠবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ এপ্রিল ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ন প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা আশ্রয়ন প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের খোকশাবাড়ী আশ্রয়ন আশ্রয়ন প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের হাজিগাও আশ্রয়ন প্রকল্পে সরাসরি গণভবন থেকে যুক্ত হবেন।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ভূমিহীন ও গৃহহীন না থাকে। সেজন্য তিনি দুই শতক জমির উপর দুই রুমবিশিষ্ট একটি ঘর উপহার দিচ্ছেন। এসব ঘরের ডিজাইন প্রধানমন্ত্রী নিজেই প্রণয়ন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬০ হাজার ১৯১টি ঘর, ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩০০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত মোট ঘরের সংখ্যা ১ লাখ ১৭ হাজার ২৯টি। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণাধীন একক ঘরের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৬৭৪টি। এর মধ্যে ৩২ হাজার ৯০৪টি হস্তান্তর হচ্ছে আগামী ২৬ এপ্রিল।’
সিনিয়র সচিব আরও জানান, এই যে ঘর দেওয়া হচ্ছে এগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে দেওয়া হচ্ছে। যার স্বামী নেই সেক্ষেত্রে স্ত্রীর নামে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যে ৩৩ হাজার ঘর হস্তান্তর করবেন তাতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ আশ্রয় পাবেন- যাদের একটি ঠিকানা ছিল না, দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হতে এর আগেও প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি বাড়ি দেওয়া হয়েছে। আগের ঘরগুলোর তুলনা এবার তৃতীয় ধাপের এসব বাড়ির কাঠামোতে বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে বাজেট এবং নির্মাণ খরচও। এবারের ঘর হস্তান্তর শেষে মোট দেড় লাখ গৃহহীন পরিবার সরকারের উপহারের ঘরের মালিক হবেন। পর্যায়ক্রমে মোট ৯ লাখ গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের ঘর উপহার দেওয়া হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে একটি পরিবারও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার পর থেকে যাদের নিজস্ব জমি নেই, ঘর নেই তাদের জমি ও ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ অধীনে এই বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে সরকারি খাস জায়গা কিংবা দখল হওয়া জায়গা দখলমুক্ত করে। ইতোমধ্যে দেশের আট বিভাগে বিপুল পরিমাণ বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত এই জমির মূল্য প্রায় ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, ঘরগুলো বেশ মজবুতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘরসহ বাড়ি যাদের দেওয়া হবে, আগেই তাদের বলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ঘরগুলো সঠিক তদারকির সুযোগ পাচ্ছেন ভূমিহীনরা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম