Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নগরে পুষ্টি কার্যক্রমে বাজেট বরাদ্দ জরুরি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ এপ্রিল ২০২২ ০০:১৭

ঢাকা: দেশের নাগরিকদের পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রয়েছে নানা ধরনের উদ্যোগ। তবে গ্রামে পুষ্টি বিষয়ে নানা ধরণের সমন্বিত উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেলেও নগরে এর ঘাটতি রয়েছে। পুষ্টিমান বজায় রাখতে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত জীবনাচার এবং খাদ্যাভ্যাসের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ে বাজেট বরাদ্দ জরুরি। এছাড়াও একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়নও জরুরি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মিলনায়তনে ‘আরবান নিউট্রিশন: ইমার্জিং ইস্যুজ’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আলোচকরা। আলোচনা সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ।

আলোচনা সভায় জানানো হয়, দেশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক নগরে বিশেষ করে দরিদ্র বসতিতে পুষ্টি ও স্বাস্থ্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। গর্ভবতী মায়ের যত্ন, প্রসবকালীন সেবা, মাতৃদুগ্ধ পান এবং শিশুর যত্ন এসব ক্ষেত্রে গত দেড় দশকে ধারাবাহিক উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। তবে সকলের মাঝে পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সেই মোতাবেক এগিয়ে যাচ্ছে। এই আয়োজনে একটি সক্ষম জাতি গঠনে সমাজের সকল স্তরে সকলের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং মাছ, মাংস, চাল, সবজিসহ অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য স্থানে অবস্থান করছে। জনসাধারণের মাঝে পুষ্টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা প্রদান এবং সকলের কাছে পুষ্টিকর খাদ্য পৌঁছানোর মতো সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে নগরে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ বাস করে। ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ নগরে বাস করবে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সাল নাগাদ নগরে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ মানুষ বাস করবে। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে নগরকেন্দ্রিক পুষ্টি কার্যক্রমকে সুসংহত করার উদ্যোগ নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নিজেদের সেবাকেন্দ্র, প্রকল্প এবং সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় পুষ্টি কার্যক্রম চালু রেখেছে বলেও জানান মো. সেলিম রেজা।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জুবাইদা নাসরীন। তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সমন্বিত ব্যবস্থা চালু থাকলেও নগরে এর অভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এজন্য নগরে পুষ্টি কার্যক্রম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত সকল সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হবে।’

বাংলাদেশ সরকার, এফসিডিও এবং ইউএনডিপি এর সহযোগিতায় স্থানীয় সরকারের অধীনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প, গেইন এবং ব্র্যাকের সহযোগিতায় এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

সভায় বক্তারা জানান, অনেক কম খরচে পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিক করা সম্ভব। তবে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকের মাঝে পুষ্টি ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। যেমন- দরিদ্র পরিবারেও শিশুদের চিপস, কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাবারের খরচে পুষ্টিকর খাবারের যোগান দেয়া যায়।

অস্বাস্থ্যকর খাবারের উপর কর বৃদ্ধি এবং অপপ্রচার বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন আলোচকরা। আলোচকরা বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত সতেজ ও পুষ্টিকর খাবারের জন্য উৎপাদন এবং বিপণন ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে। এছাড়া খেলাধুলা, হাঁটা ও ব্যায়ামের জন্য নিরাপদ ও পরিবেশ দরকার। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঘুম, মোবাইল আসক্তি কমানো, প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার থেকে বিরত থাকাসহ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনাচারের গুরুত্ব অপরিসীম।

আলোচনা সভায় বিএনএনসি, এনএনসি, ইউএনডিপি, গেইন এবং ব্র্যাকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ তথা নগরে পুষ্টি কার্যক্রমবিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন। এছাড়াও অসংক্রামক রোগ, পুষ্টি ও বাজার ব্যবস্থা, পুষ্টি ও সুশাসন এবং হেলদি সিটি নিয়ে বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন আলোচকরা।

এদিন আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবির এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার মো. জোবাইদুর রহমান।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

নগরে পুষ্টি কার্যক্রম বাজেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর