Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদ্যালয়ের ১০ একর জমি বেদখল, নেই উদ্ধারের চেষ্টা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৭ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৫৩

ছবি: সারাবাংলা

পটুয়াখালী: জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০ দশমিক ৩৮ একর জমি বেদখল হয়ে গেছে। বছরের পর বছর বিদ্যালয়টির জমি বেদখল হলেও উদ্ধার করার উদ্যোগ নিচ্ছেন না কেউ। দখল করা জমিতে বসবাস করছেন ২০টি পরিবার। তবে বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটি জমি উদ্ধারের চেষ্টা করলেও তা কয়দিন অব্যাহত থাকবে এবং বেদখল জমি উদ্ধার হবে কি না তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেএল ৩৪ নম্বর লতাচাপলী মৌজার এসএ ৬২৯ নম্বর খতিয়ানে ৪৮নং মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকূলে ১৪ দশমিক ৩৮ একর জমি রেকর্ডভুক্ত আছে। বেদখল হওয়ার কারণে বর্তমান বিএস জরিপে জেএল ৬০ নম্বর লতাচাপলী মৌজার বিএস ২ নম্বর খতিয়ানে ১২৫৮, ১২৫৯, ১২৬০, ১২৬১, ১৩৪৭, ২০১৯, ২০২০, ২০২২, ২০২৩, ২০২৪, ২০২৫, ২০৭৬, ২০৭৮ নং দাগসমূহে ৯ দশমিক ৮৯ একর জমি রেকর্ডভুক্ত হয়। বাকী ৪ দশমিক ৪৯ একর জমি ১নং খাস খতিয়ানে রেকর্ড হয়েছে। এদিকে বিদ্যালয়ের নামে বিএস জরিপে ৯ দশমিক ৮৯ একর জমির রেকর্ড বিদ্যমান থাকলেও স্কুলের দখলে আছে মাত্র ৪ দশমিক শূন্য একর। বাকী ৫ দশমিক ৮৯ একর জমি স্থানীয় বাসিন্দারা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে, পুকুর খনন করে ভোগদখল করছেন।

বিজ্ঞাপন

স্কুলের জমিতে বসবাসকারী দখলদাররা হলেন- পনু, বেলায়েত, জাফর, জমিরুল, শহিদুল ইসলাম, মহসীন, হুমায়ুন, হাবিব, জামাল, সোহাগ, মানিক, নাসির, ইউনুচ, মহিমা, খাদিজা, আ. আজিজ, নুরু আকন, বেল্লাল হোসেন, আবুল কালাম, আ. জলিল হাওলাদার।

স্কুলের জমি দখল করে খনন করা হচ্ছে পুকুর, ছবি: সারাবাংলা

স্কুলের জমি দখল করে খনন করা হচ্ছে পুকুর, ছবি: সারাবাংলা

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের জমিতে ভেকু মেশিন দ্বারা পুকুর খনন করছেন বেলায়েতের ছেলে জহিরুল ইসলাম ও মা মাজেদা বেগম। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পাউবো বেড়িবাঁধের উন্নয়ন কাজ চলছে। কিন্তু পাউবো’র নতুন বেড়িবাঁধটি সম্পূর্ণ স্কুলের জমির উপর দিয়ে গেছে। ৪৮নং পোল্ডারের আওতাভুক্ত পাউবো বেড়িবাঁধের দু’পাশের স্কুলের জমি। এসএ ও বিএস নকশানুযায়ী বেড়িবাঁধের ঢাল বাদে স্কুলের জমির সীমানা। কিন্তু দু’পাশে অত্যন্ত ২০টি পরিবার বসবাস করছেন। স্কুলের জমিতে কেউ কেউ পুকুর খনন করেছেন, কেউ আবার গভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন।

স্কুলের জমিতে বসবাসকারী আ. জলিল বলেন, আমরা প্রথমে খাস জমি ভেবে বসবাস শুরু করেছি। পরবর্তীতে শুনেছি স্কুলের জমি। এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা আমি মেনে নেবো।

আরেক দখলদার মহসীন বলেন, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেড়িবাঁধের খাস জমিতে বসবাস করছি। স্কুলের জমি তা আমার জানা নেই।

মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অনেক বছর ধরে স্কুলের জমিতে স্থানীয় বাসিন্দারা অবৈধভাবে দখল করে বসবাস করছেন। তাদের কাছে কোনো কাগজপত্র না থাকলেও তারা স্বেচ্ছায় জমি ছেড়ে যাচ্ছেন না। অবৈধ দখলদারদের আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ করা হবে। আমি ইতোমধ্যে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের কাজ শুরু করেছি।’

জমি উদ্ধারের বিষয় জানতে চাই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি রানী ভৌমীক বলেন, ‘উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নিবেন।’

কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল বাসার বলেন, ‘স্কুলটির নামে এত জমি আছে তা আমার জানা ছিল না।’

এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুহাসনাত শহিদুল হক বলেন, ‘৪৮ নং মহিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখল করা জমি উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এনএস

কলাপাড়া উপজেলা পটুয়াখালী বিদ্যালয়ের জমি দখল মহিপুর থানা মহিপুর থানার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর