ইদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের আশঙ্কা
২৭ এপ্রিল ২০২২ ১৭:১৬
গাজীপুর: পবিত্র ইদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। এই সময়ে অগ্রিম টিকিট কেনার চাহিদা বেড়ে গেছে ইদে বাড়ি ফেরা মানুষের মাঝে। এই সুযোগকে পুঁজি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করে একটি সিন্ডিকেট। প্রতি বছরই দেখা যায় কিছু পরিবহন শ্রমিকরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়কে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগিয়ে গণপরিবহনে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেন। যাত্রীরা আশঙ্কা করছেন এবারও সেই একই কাজ হতে পারে।
গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড হয়ে ব্রাক্ষণবাড়িয়া রুটে চলাচল করে তিতাস পরিবহন, উত্তরা পরিবহন, লাবিবা পরিবহন, ইকোনো পরিবহন ও কাজী পরিবহন নামে মোট ৫টি কোম্পানির বাস। শুধু তাই নয়, ভৈরব ও নরসিংদী রুটে চলাচল করে চলনবিন পরিবহন, বাদশা পরিবহন ও পি.পি.এল পরিবহন নামে আরও ৩টি কোম্পানির বাস। ব্রাক্ষণবাড়িয়া রুটে চলাচলরত পরিবহনগুলোর মধ্যে বর্তমানে ব্রাক্ষণবাড়িয়া পর্যন্ত ভাড়া ২৪০ টাকা, ভৈরব পর্যন্ত ১৫০ টাকা ও নরসিংদী পর্যন্ত ৯০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
অফিস-আদালত বন্ধ হওয়ার পরপরই বাড়তে থাকে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের চাপ। ঠিক সেসময় এই রুটে চলাচলরত বাসগুলোর ভাড়া বেড়ে যায় অনেকাংশে। অনেকসময় লক্ষ্য করা যায় দ্বিগুণ ভাড়াও আদায় করছে কেউ কেউ। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে মিলে না টিকিট। বাস কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয় অতিরিক্ত ভাড়া না দিলে কোনোভাবেই টিকিট পাওয়া সম্ভব না। অনেকটা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয় ইদে বাড়ি ফেরা মানুষের।
ইদের ছুটি ঘোষণার পরপরই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি যান জুয়েল। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায়। তিনি বলেন, ইদে গণপরিবহনের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে যাই। স্টেশন রোডে সকল কাউন্টারেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। পূর্ববর্তী ভাড়া বললে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করেন। শুধু তাই নয়, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব বলেছিলাম। এতে কাউন্টারের লোকজন আমাকে বলে যে, অভিযোগ করে নাকি তাদের কিছুই করতে পারব না। থানা-পুলিশ সবই নাকি তাদের হাতে।
মনির নামে একজন বলেন, এমনিতেই করোনার কারণে মানুষের টাকা নেই, পেটে ভাত নেই। তার উপর যদি দ্বিগুণ ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয় তাহলে তা হবে একেবারেই অমানবিক। আমাদের দাবি থাকবে ইদের সময় যেন ভাড়া বৃদ্ধি না পায় সেজন্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেন কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়।
এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি যদিও আমাদের তদারকির দায়িত্ব না। তবুও যদি এমন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে ইদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা স্থানীয় থানা-পুলিশের সহায়তায় আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গাজীপুর সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) মো. আবু নাঈম জানান, আমরা এই বিষয়গুলো তদারকির জন্য সর্বদা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব। যদি কেউ সরকারি নির্দেশনার বাহিরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সারাবাংলা/এসএসএ