তেঁতুলতলা পুলিশের জায়গা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
২৭ এপ্রিল ২০২২ ১৭:৫৪
ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, রাজধানীর কলাবাগান এলাকার তেঁতুলতলা মাঠটি থানার জন্যই নির্দিষ্ট জায়গা। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই জায়গা টাকা দিয়ে পুলিশের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই জায়গার বিকল্প এবং উপযুক্ত স্থান যদি কেউ দিতে পারে তাহলে এখানে থানা নির্মাণ করা হবে কি না সেটি বিবেচনা করা হবে।
বুধবার ( ২৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যেটাকে তেঁতুলতলা মাঠ বলা হচ্ছে, সেটা কখনোই মাঠ ছিল না। এটা এক সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিত্যক্ত সম্পত্তি ছিল।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকায় নতুন যেসকল থানা স্থাপন করা হয়েছে বা হচ্ছে তার বেশিরভাগই ভাড়া বাড়িতে। এ কারণে পুলিশের ফোর্সকে নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। সেজন্য এগুলোকে স্থায়ী জায়গায় নেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের কাছে জমি অধিগ্রহণের জন্য বলা হয়। কলাবাগানের ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে। এই জায়গা পরিত্যক্ত থাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এই জায়গা থানার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই জায়গার যা মূল্য তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জমা দেওয়ার পর ডিসি জায়গা বুঝিয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুনেছি জায়গাটা খালি পড়ে থাকায় বাচ্চারা খেলাধুলা করত। এখন কলাবাগান থানার জন্য একটি ভবন দরকার আর সেজন্য জায়গা দরকার। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বলছি এ জায়গা আমাদের জন্য বরাদ্দ। এর চেয়ে যদি ভালো স্থান বা উপযুক্ত জায়গা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি দিতে পারেন তাহলে বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব। আপাতত থানার জন্য এটাই নির্দিষ্ট জায়গা। সরকারিভাবে এই জায়গার ব্যবস্থা হয়েছে।
ওই মাঠে এখনই নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন— সেটা পরের কথা। বরাদ্দ যেহেতু পুলিশকে দেওয়া হয়েছে, সেহেতু ওই জায়গা এখন পুলিশের।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে আবেদন এসেছে। মাঠটি রক্ষা করে বিকল্প কিছু করা যায় কি না সে বিষয়ে। আমি বলেছি আমরা তো এখনই নির্মাণ কাজে যাচ্ছি না। খুঁজুন, আমরা দেখব। আপনারা যদি এর চেয়ে ভাল জায়গার খোঁজ দিতে পারেন আমরা তা অবশ্যই দেখব।
মাঠ-জলাশয় রক্ষা করে উন্নয়ন কাজ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা আছে—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানে (তেঁতুলতলা মাঠ) ২০ কাঠা জমি রয়েছে। এটা খুব বড় জায়গা না। ফুটবল খেলার উপযোগীও নয়। তারা যেহেতু একটা আবেদন করে গেছেন, দেখি আমরা কি করতে পারি। আমরা জায়গার জন্য টাকা দিয়ে ফেলেছি, সেটার কি হবে সবকিছু নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
বিষয়টি এখন মানুষের আবেগের জায়গায় চলে গেছে ঊল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের থানার জন্য জায়গা দরকার সেটাও জনগণকে বুঝতে হবে। জায়গাটা আমরা নির্বাচন করিনি। এটা অধিগ্রহণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে আন্দোলন করা সমাজকর্মী খুশী কবির, আইনজীবি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থপতি ইকবাল হাবিব, সাংস্কৃতিক কর্মী সংগীতা ইমাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
এ প্রসঙ্গে খুশি কবীর বলেন, আমরা চাচ্ছিলাম মাঠটি রক্ষা করতে। আমরা চাচ্ছি এবার ইদের জামাত হোক তেঁতুলতলা মাঠে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিষয়টি জানাবেন।
বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা আশা করব খেলার মাঠটির বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফিল করবেন। ওই এলাকায় আরও পরিত্যাক্ত জায়গা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে সরকার চিন্তা করতে পারে।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ