নিরাপত্তাকর্মীদের পরিকল্পনায় এটিএম বুথে চুরি
২৭ এপ্রিল ২০২২ ২০:৪৭
ঢাকা: ডাচ্ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ২৩১ এটিএম বুথ থেকে দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে গারদা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানির সাবেক ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট তাহমিদ উদ্দিন পাঠান (২৭) এবং মেশিন মেইনটেন্যান্স কর্মী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআই বলছে, তারা পেশাগত দায়িত্ব পালনের আড়ালে একটি চক্রের হয়ে কাজ করছিলেন। গ্রেফতারের পর ইতোমধ্যে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এর আগে, চক্রের আরও ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। চক্রটি রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ২৩১ এটিএম বুথ থেকে অভিনব কায়দায় দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই দুই জন গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নিজেদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তারা।
জবানবন্দিতে তারা জানান, তারা গারদা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে ক্যাশ অ্যাটেনডেন্ট ও মেশিন মেইনটেন্যান্স হিসেবে চাকরি করতেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার এটিএম বুথে টাকা লোডের জন্য গারদা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিতে বুথের তালিকা ও টাকা লোডের পরিমাণসহ রিকুইজিশন আসত। চক্রের সদস্যরা প্রতিটি দলে দুই-তিন জন করে ভাগ হয়ে এটিএম বুথে টাকা লোড ও মেশিন মেইনটেন্যান্সের কাজ করতেন। ডিউটির সময় তারা এটিএম মেশিনে টাকা লোড করার পর ফলস ট্রানজেকশন করতেন। এভাবে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা গারদা শিল্ড সিকিউরিটি কোম্পানিকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে। গারদা শিল্ড কোম্পানি ঘটনার বিষয়ে যাচাই করে প্রাথমিকভাবে তাহমিদ উদ্দিন পাঠান, আব্দুর রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পায়। কোম্পানির পক্ষে সৈয়দ আব্দুল আলম বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি কাফরুল থানা পুলিশ প্রাথমিক পর্যায়ে এক মাস তদন্ত করে। তদন্তকালে এজাহারে বর্ণিত আসামিসহ আরও ৯ আসামিদের পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানান, তাদের চক্রে জড়িত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কামরুল হাসান, তারেক আজিজ, আলী, রবিউল হাসান, আব্দুল কাদের, হাবিবুর রহমান, সুজন মিয়া, তরিকুল ইসলাম এবং শিশির কুমার মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার ডাচ-বাংলার এটিএম বুথসমূহে টাকা লোড দিয়ে নিজে ও আত্মীয়দের নামে ইস্যু করা এটিএম কার্ড দিয়ে ফলস ট্রানজেকশনের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নিত। এভাবে চক্রটি পাঁচ মাসে দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম