Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অনলাইনে বেড়েছে ইদের কেনাকাটা, খুশি বিক্রেতারা

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ এপ্রিল ২০২২ ২২:০৭

ঢাকা: এবার ইদে অনলাইন কেনাকাটা বেড়েছে। পোশাকের চেয়ে এবার অনলাইন থেকে ক্রেতারা ইলেট্রনিক্স গেজেট, ব্যতিক্রমী পণ্য, ঘরে বানানো জিনিসপত্র বেশি কিনছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইদ উপলক্ষে সাধারণ সময়ের চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটা বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। সবমিলিয়ে ‘ভালো সেলে’ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও অনলাইন বিক্রেতারা সন্তুষ্ট।

জানতে চাইলে ই- কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘অনলাইনে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। ইদের সময় এবার গত কয়েক মাসের চেয়ে অনেক বেশি কেনাকাটা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনাকালের চেয়েও এখন অনলাইনে কেনাকাটা বেড়েছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ইদ কেন্দ্র করে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোজার আগে যেখানে দৈনিক আড়াই লাখ ডেলিভারি হতো সেটি এই মুহূর্তে সাড়ে দিন লাখ এর বেশি হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত বছরসমূহে আমরা লক্ষ্য করেছি অনলাইন কেনাকাটা ইদের সময়ে বৃদ্ধি পায়। রমজান মাসের লেনদেন তার আগের মাসের লেনদেনে থেকে ৫০ শতাংশ বেশি থাকে। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন সারাদেশে ডেলিভারির পরিমাণ ৩ লাখের মতো। ইদকে কেন্দ্র করে এই ডেলিভারির সংখ্যা সাড়ে ৪ লক্ষ্যে পৌঁছাবে। প্রতিটি ডেলিভারির বাস্কেটভ্যালু ২১৫০ টাকা থেকে ২২শ টাকা ছিল। ইদের বাস্কেটভ্যালু গড়ে ২৫শ টাকা হবে। সাধারণত পোশাকের ক্ষেত্রে বাস্কেটভ্যালু আরও কম হলেও গেজেটের কারণে এর গড় ভ্যালু বেড়ে যায়।

জানতে চাইলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আজকের ডিল এর সিইও ফাহিম মাশরুর সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখন মানুষ ই-কমার্স সাইটের চেয়ে ফেসবুক পেইজ থেকে বেশি কেনাকাটা করছে। সাধারণ সময়ের চেয়ে ইদকে ঘিরে ৫০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। করোনা মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় প্রায় দুই বছর পর মানুষ এখন স্বশরীরে মার্কেট বা শপিং মলে গিয়ে কেনাকাটা করলেও অনলাইন কেনাকাটায় তার প্রভাব পড়েনি।’

বিজ্ঞাপন

তবে পোশাক বিক্রির ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পূষণাবিডি ডটকমের প্রধান শারমিন সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই বছর পর মার্কেট পুরোপুরি খুলে গেছে। ফলে কাস্টমার পরিবার পরিজন নিয়ে মার্কেটে মার্কেটে ছুটছেন। সেখান থেকে পোশাক কিনছেন। দাম বেশি হলেও কিনছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যারা ফেসবুক বা ই কমার্স কেন্দ্রিক ব্যবসা করছি, তাদের এবারে বিক্রি অনেক কম। দেখা গেছে সপ্তাহে দু এক দিন বিক্রি হয়েছে বাকি সময়টাতে কোনো বিক্রি নেই। এটি ধরে রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়াটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এদিকে, ফেসবুকে হ্যান্ডমেইড শাড়ি, পাঞ্জাবি ও বাচ্চাদের কাপড় বিক্রির একটি পেজ ‘রংধনু ক্রিয়েশন’। এ পেজের উদ্যোক্তা শাহনাজ সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিক্রি মোটামুটি চলছে। ভালোই রেসপন্স পাচ্ছি। পহেলা বৈশাখে আমাদের বিক্রি বেশ ভালো ছিল। নিয়মিত ক্রেতাদের মধ্যে যারা পহেলা বৈশাখে কেনাকটা করেছেন তারা এখন আর কিনছে না।’

এখন ঘরে তৈরি জিনিসপত্র, ব্যতিক্রমধর্মী পণ্য বেশি কেনাবেচা হচ্ছে। শো-রুমে গেলে পাবে না, একেবারেই আনকমন এমন জিনিষই এখন মানুষ অনলাইন থেকে বেশি কিনছে। পাঞ্জাবি, কামিজ, কুর্তি এবার কম কেনাবেচা হচ্ছে। কারণ মানুষ অনেকদিন পর স্বশরীরে মার্কেট বা শপিং মলে যেতে পারছে- তাই তারা দেখে, শুনে- হাত বুলিয়ে ইদের পোশাক কিনছে বলে মনে করছি।

ছেলে-মেয়েদের জন্য বিদেশি কসমেটিস ও প্রসাধনী বিক্রির ফেসবুক পেইজ ‘মেকআপ চারি’।

পেইজটির স্বত্বাধিকারীদের একজন আতিফ খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইদের আগে তেমন বিক্রি ছিল না। বেতন-বোনাস পাওয়ার পর মানুষ এখন প্রচুর কিনছে। এখন প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। শেষদিকে বেচাকেনা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।’

দারাজ বাংলাদেশের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) মো. তাজদীন হাসান বলেন, ‘দেশের সকল মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ইদুল ফিতর উদযাপন করে। আসন্ন ইদে আমাদের ক্রেতাদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে আমরা ইদ শপিং ফেস্ট ক্যাম্পেইন চালু করেছি। ইদ শপিং ফেস্ট ক্যাম্পেইনটিতে দেশজুড়ে থাকা আমাদের ক্রেতারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্ডার পেয়েছি এবং গ্রাহকের চাহিদা মোতাবেক পণ্য সরবরাহ করে যাচ্ছি।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

অনলাইন কেনাকাটা ইদ মার্কেট করোনাভাইরাস কেনাকাটা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর