Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অযথা হর্ন না বাজানোর আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ এপ্রিল ২০২২ ২৩:২৮

ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শব্দ দূষণের শহর ঢাকায় দূষণের জন্য উচ্চমাত্রার হর্ন অনেকাংশে দায়ী। তাই শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকার গাড়িচালকদের হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকতে উদ্বুদ্ধ করতে এক ক্যাম্পেইন চালিয়েছেন পরিবেশ অধিকারকর্মীরা। এসময় তারা গাড়িচালকসহ সবার মধ্যে ফুল ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।

কর্মসূচি থেকে গাড়িচালকদের প্রতি যানজটে অযথা হর্ন না বাজানো, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে হর্ন না বাজানোর অভ্যাস করা, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ মেনে চলা, গাড়িতে নিষিদ্ধ হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার না করা, নো-হর্ন সাইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, যত্রতত্র গাড়ি রাস্তায় পার্কিং করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল ১১টায় শাহবাগ মোড়ে ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য শ্রবণশক্তি রক্ষা করুন, অযথা গাড়ির হর্ন দেওয়া থেকে বিরত থাকুন’ শীর্ষক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), রায়ের বাজার হাই স্কুল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, লাইফ সার্ভ বাংলাদেশ, দ্য ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং বাংলাদেশ (আইডাব্লিউবি), কারফ্রি সিটিজ অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট অংশ নেয়।

পরিবেশকর্মীরা বলেন, বায়ু দূষণের পর শব্দ দূষণেও রাজধানী ঢাকা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শহরের তালিকায় এক নম্বরে উঠে এসেছে। কেবল রাজধানীতে নয়, সারাদেশেই শব্দ দূষণ ক্রমে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ঢাকা শহরে শব্দ দূষণের অন্যতম কারণ গাড়ির হর্ন। বিশেষত যানজটে আটকে থাকার সময় গাড়িচালকদের অযথা হর্ন বাজানোর কারণে অনেক বেশি শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। অথচ শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসনিক এলাকা ইত্যাদি নিরব এলাকা। তা সত্ত্বেও এসব এলাকায় মানমাত্রার থেকে দ্বিগুণের বেশি শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। যানবাহনজনিত শব্দদূষণ কমাতে গাড়িচালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

বিজ্ঞাপন

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, শব্দ দূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, দুশ্চিন্তা, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক অবসাদসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। কারণ তাদের ওপর শব্দ দূষণের প্রভাব স্থায়ী হতে পারে। গর্ভবতী নারীরা অতিরিক্ত শব্দ দূষণের শিকার হলে সন্তানদের বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। বর্তমানে ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি শব্দ দূষণ হয়ে থাকে যানবাহনের অযথা ও অতিরিক্ত হর্নের কারণে। বিশেষত যানজটে আটকে থাকার সময় গাড়িচালকদের মধ্যে অযথা হর্ন বাজানোর মানসিকতার কারণে নগরবাসী ভয়াবহ শব্দ দূষণের শিকার হন।

দ্য ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িংয় বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আ ন ম মাছুম বিল্লাহ ভুঁঞা বলেন, শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ অনুযায়ী, নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি মাত্রায় শব্দ উৎপাদন করলে অর্থাৎ আইন ভঙ্গ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা শব্দের উৎস বা যন্ত্রপাতি জব্দ করতে পারবেন। দোষী প্রমাণিত হলে প্রথম অপরাধের জন্য একমাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড এবং দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে শব্দ দূষণ উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে।

ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির বলেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের মাঝে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। বিশেষত অযথা হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকার জন্য গাড়িচালকদের সচেতন করে তোলা প্রয়োজন। গাড়িচালকের বাজানো হর্নের কারণে তিনি নিজে, তার সন্তান-আত্মীয় স্বজন সকলেই শব্দ দূষণের ভয়াবহতার শিকার হচ্ছেন, যা তিনি হয়তো অনুধাবনও করতে পারছেন না।

পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন দ্য ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আ ন ম মাছুম বিল্লাহ ভুঁঞা, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির। আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন লাইফ সার্ভ বাংলাদেশ, রায়ের বাজার হাই স্কুল, আইডাব্লিউবি, কারফ্রি সিটিস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ, ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের কর্মকর্তারা।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

শব্দ দূষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর