Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৮৯০ টাকার জন্য বন্ধুর হাতে প্রাণ গেল স্কুল শিক্ষার্থীর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ এপ্রিল ২০২২ ০২:৫১

রংপুর: তৌহিদুল ইসলাম নাইফুলের (১১) কাছে এক হাজার টাকা দেখতে পেয়ে তা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে তারই বন্ধু ওমর ফারুক ওরফে সামিউল। সে অনুযায়ী সামিউল নিজেদের সেচ পাম্পের মেশিন ঘরে নিয়ে যায় নাইফুলকে। চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর পাম্প চালানোর ফিতা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মানিব্যাগে থাকা ৮৯০ টাকা ও হাতঘড়ি নিয়ে নেয় সামিউল। আর সেচ পাম্পের মেশিন ঘরেই নাইফুলের লাশ গর্ত করে মাটি চাপা দেয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, নাইফুল নিখোঁজের ঘটনায় তার পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছিল। সেই জিডি’র তদন্ত করতে গিয়েই সামিউলের হাতে তার হত্যার শিকার হওয়ার তথ্য জানতে পারে পুলিশ। এ ঘটনায় সামিউলকে গ্রেফতারের পর আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান আসাদ সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই পুলিশের কাছে বন্ধুকে হত্যার তথ্য স্বীকার করে সামিউল। পরে আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

হত্যার শিকার নাইফুল চৈত্রকোল ইউনিয়নের শাল্টি পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে। সে শমস দীঘি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। অন্যদিকে গ্রেফতার সামিউল একই গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। সে নিয়মিত নেশা করত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নাইফুলের ফুপাতো ভাই ফিরোজ মাহমুদ জানান, গত ২৪ এপ্রিল বিকেলে নাইফুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় বন্ধু সামিউল। ইদ উপলক্ষে জামাকাপড় কেনাকাটা করতে বাড়ি থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়ে যায় নাইফুল। কিন্তু রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেলেও বাড়িতে ফিরে না আসায় পীরগঞ্জ থানায় জিডি করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। সেই জিডি’র তদন্ত করতে গিয়েই সন্দেহভাজন আচরণের কারণে সামিউলকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, সেই জিজ্ঞাসাবাদেই সামিউল বন্ধুকে হত্যার তথ্য স্বীকার করে। সে অনুযায়ী নিখোঁজের তিন দিন পর মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাতে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের পালগড় গ্রামের একটি সেচ পাম্পের ঘরের মেঝের গর্ত থেকে স্কুলশিক্ষার্থী নাইফুলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় নাইফুল বন্ধু সামিউলের সঙ্গে কলোনি বাজারে গিয়ে খিচুড়ি খায়। খিচুড়ি খাওয়া শেষে নাইফুল টাকা দিতে মানিব্যাগ বের করলে সেখানে এক হাজার টাকা দেখতে পায় সামিউল। সে টাকাগুলো কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী সেদিন দিন রাতেই নাইফুলকে সঙ্গে নিয়ে সামিউল তাদের সেচ পাম্পের মেশিন ঘরে যায়। সেখানে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে মেশিনের ফিতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মানিব্যাগে থাকা ৮৯০ টাকা ও হাতঘড়ি নেয়। সেচ পাম্পের মেশিন ঘরেই গর্ত করে নাইফুলের মরদেহ মাটি চাপা দেয়।

আসাদুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নাইফুলকে সেচ পাম্প চালানোর ফিতা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার কথা শিকার করেছে সামিউল। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই সেচ পাম্পের ঘরের মেঝের গর্তে পুঁতে রাখা নাইফুলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় সামিউলের কাছ থেকে নাইফুলের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হাতঘড়ি, মানিব্যাগ ও ৮৯০ টাকা জব্দ করে পুলিশ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বাবা নুর আলম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আটক সামিউলকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে সামিউল।

সারাবাংলা/টিআর

বন্ধুর হাতে খুন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর