কলেজ ছাত্র খুন: ছুরিকাঘাতকারীর ‘বড় ভাই’ গ্রেফতার
২৮ এপ্রিল ২০২২ ১৪:০৫ | আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ১৫:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকায় ছুরিকাঘাতে কলেজ ছাত্র খুনের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ছুরিকাঘাতের সময় ওই যুবক ঘটনাস্থলে ছিল এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে নগরীর সিআরবি সাত রাস্তার মাথা থেকে ওই যুবককে কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার প্রিয়ম বিশ্বাসের (২৫) বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী গ্রামে। তিনি রানা বিশ্বাসের ছেলে।
এর আগে, ২২ এপ্রিল রাতে নগরীর চেরাগি পাহাড় সংলগ্ন রাজাপুর লেইনের দয়াময়ী ভবনের সামনে ছুরিকাঘাতে আসকার বিন তারেক ওরফে ইভান (১৮) নামে এক তরুণ খুন হন। ইভান নগরীর বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবার নাম এস এম তারেক। নগরীর এনায়েত বাজারে জমির উদ্দিন ম্যানশনে তাদের বাসা।
এ ঘটনায় এস এম তারেক বাদি হয়ে আট জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে প্রিয়মের নাম মামলার এজাহারে নেই।
নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার মুজাহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ছুরিকাঘাতের পর গ্রেফতার প্রিয়মসহ কয়েকজন রক্তাক্ত ইভানকে ধরাধরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। তদন্তে আমরা তথ্য পেয়েছি, ইভানকে মূলত ছুরিকাঘাত করে মহান নামে এক উঠতি বয়সী তরুণ। এই মহানের কথিত বড় ভাই হচ্ছে প্রিয়ম। ছুরিকাঘাতের সময় ইভানকে কয়েকজন কিশোর-তরুণ দুইদিক থেকে শক্ত করে ধরে রাখে। প্রিয়ম তার একহাত ধরে রেখেছিল, মহান ছুরিকাঘাত করেছিল।’
নিহত ইভানসহ মারামারিতে জড়িতরা সবাই নিজেদের ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়। বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশেও তাদের দেখা যেত। পুলিশ ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উঠতি বয়সের এসব কিশোর-তরুণরা স্থানীয়ভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আবার এদের মধ্যে জামালখান, আন্দরকিল্লা, রহমতগঞ্জ- এ ধরনের বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক উপগ্রুপ আছে।
রহমতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাব্বির সাদিক নামে একজনের নেতৃত্বে একটি উপগ্রুপ আছে। সাব্বির নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। কাউন্সিলর শৈবাল এবং সাব্বির সাদিক নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জামালখানে ফুটপাতের পাশে চেয়ারে বসা নিয়ে দুই উপগ্রুপের মধ্যে ঝগড়া একপর্যায়ে সংঘাতে রূপ নেয়। এর জেরেই প্রাণ হারান কলেজ ছাত্র ইভান।
ওই ঘটনার পর এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, যে নিজেও ছুরিকাঘাতে আহত ছিল। সর্বশেষ প্রিয়ম বিশ্বাসসহ এ পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত দুই জন গ্রেফতার হলো।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভান হত্যা মামলায় এর আগে যে গ্রেফতার হয়েছিল, সে কিশোর বয়সী হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। প্রিয়মকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। প্রিয়ম আগে থেকেই জামালখানসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/একেএম