আগের মতো চাপ নেই ট্রেনে
২৯ এপ্রিল ২০২২ ১৭:৫৮
ঢাকা: ইদ এলেই যেন কমলাপুরে উপচে পড়া ভিড় আর ঠেলাঠেলিতে পা ফেলার জায়গা থাকে না মানুষের। করোনা মহামারির দু’বছর পর এবার প্রথম স্বাভাবিক ইদ হতে চলেছে। শুরুর দিকে রেলের টিকিট প্রত্যাসীদের চাপ থাকলেও যাত্রা শুরু হলে ধীরে ধীরে যাত্রীচাপ কমতে শুরু করে।
গত ২৭ এপ্রিল প্রথম এবারের ইদযাত্রা শুরু হয়। সেদিন যাত্রীদের চাপ বেশি ছিল। অনেকে টিকিট কেটেও ট্রেনে উঠতে না পেরে বাসায় ফিরে আসেন। আবার কেউ টিকিট না কেটেও ট্রেনে উঠে দিব্যি সিটে বসে বাড়িতে ফিরছেন।
গত ২৮ এপ্রিলও অনেকটা উপচেপড়া ভিড় নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে গন্তব্যে ছেড়ে গেছে ৩৮টি ট্রেন। তবে ২৯ এপ্রিল এসে যাত্রী ভিড় অনেকটা কম দেখা গেছে। এদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে গেলেও আগের ইদগুলোর মতো যাত্রীচাপ নেই।
রেলের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলছেন, অন্যবারের মতো যাত্রীদের এ চাপ আজকের যাত্রী চাপের সঙ্গে মেলালে চলবে না। আজকে কোনো যাত্রী চাপই নেই। আগে যেমন ট্রেনের দরজা, জানালা, ছাদ সবখানে শুধু মানুষ আর মানুষ ছিল। এবার তা নেই। যাত্রী চাপ আছে তবে ট্রেনের ভেতরে যে জায়গা আছে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। ট্রেনের ছাদে এবার কেউ উঠছে না।
সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে রংপুর এক্সপ্রেস ছাড়ার আগে দেখা যায়— সিটের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী ট্রেনটিতে অবস্থান করছিলেন। তবে গরমে সবাই অতীষ্ট ছিলেন। যে পরিমাণ ভেতরে লোক উঠেছে আর বিপরীতে ট্রেনের যে ফ্যান চলছিল তা পেরে উঠতে পারছিল না।
দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেসেও যাত্রীদের মোটামুটি ভিড় দেখা গেছে। চট্টগ্রাম ও সিলেটমুখী যেসব ট্রেন গেছে সেগুলোতেও ভিড় লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্যণীয় ছিল জামালপুরগামী তিস্তা এক্সপ্রেসে। এরপরেও ট্রেনের ছাদে কেউ ওঠেনি।
যাত্রীচাপ নেই কেন? কিংবা যাত্রীদের আগের ইদগুলোর মতো উপচেপড়া ভিড় নেই কেন? এটি ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিতে যাওয়ার কারনে এমনটা হয়েছে নাকি অন্যকিছু?
জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সরোয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘যাত্রীচাপ আছে তবে এটি কিছু না। প্রতিটা ট্রেনে প্রায় দ্বিগুণ যাত্রী যাচ্ছে। এবার অনেক আগে থেকে পরিবারের লোকজন গ্রামে চলে গেছে। এরপর বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে অনেকে চলে যাচ্ছে। ট্রেনে টিকিট চেকার বসানো হয়েছে। এরপর কাউকে ছাদে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। এজন্য হয়তো যাত্রীদের সেইরকম উপচে পড়া ভিড় নেই।’
মাসুদ সরোয়ার আরও বলেন, ‘আগামীকাল থেকে গার্মেন্টস ছুটি হবে। এরপর হয়ত আগের মতোই যাত্রীচাপ থাকবে। আমরা চাই সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরুক। কারও যেন ঝামেলা নিয়ে বাড়ি ফিরতে না হয়।’
রেলওয়ে নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) ভোর থেকেই রেলস্টেশনে আসতে শুরু করেন যাত্রীরা। আর গেটে টিকিট চেক করে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কেবল সুন্দরবন এক্সপ্রেস ছাড়া বাকী সব ট্রেনই সময় মতো ছেড়ে গেছে।
এর আগে, গত ২৩ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। যা চলে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। এ ট্রেনের টিকিট পেতে স্টেশন ও অনলাইনেও ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ বা ৩ মে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ইদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
সারাবাংলা/ইউজে/একে