‘সাংবাদিকদের শ্রমিক বানিয়েছিল বিএনপি’
২৯ এপ্রিল ২০২২ ২১:২৯
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতারা এখন সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে বড় বড় কথা বলে অথচ তারাই ২০০৬ সালে ক্ষমতা থেকে যাওয়ার কিছুদিন আগে কলমের এক খোঁচায় আইন পরিবর্তন করে সমস্ত সাংবাদিককে শ্রমিক বানিয়েছিল।
শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলনা প্রেসক্লাবের শহীদ শেখ আবু নাসের ব্যাংকোয়েট হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারের জন্য সহায়তা এবং করোনা সহায়তা চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন, এরশাদ সাহেব ছিলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি দুই বার ক্ষমতায় ছিল সাংবাদিকদের কল্যাণে তারা কিছু করেনি। কোনো ট্রাস্ট করেনি। সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
শুধু তাই নয়, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল এই খুলনাতেই হুমায়ুন কবির বালু, মানিক সাহা, যশোরে শামসুর রহমান কেবল, সাইফুল আলম মুকুলসহ অনেক সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, শতশত সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছেন উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সরকার সাংবাদিকদের পাশে আছে।
এ সময় দেশ ও সমাজ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকাকে অনন্য হিসেবে বর্ণনা করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে জনমত তৈরি হয়, সমাজ সঠিক বার্তা পায়, আবার কারও ভুল বা অসত্য লেখনীর মাধ্যমে সমাজ ভুলবার্তা পায়। দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র গঠনে ও সমাজকে ঠিক খাতে প্রবাহিত করতে সাংবাদিকরা যেভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন, অন্য পেশার মানুষ সেভাবে পারেন না।
পৃথিবীতে আয়তনের দিক দিয়ে ৯২তম যে দেশে মাথাপিছু জমির পরিমাণ সর্বনিম্ন, বাংলাদেশ যখন বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে দ্বিতীয়-তৃতীয়ের মধ্যে ওঠানামা করে, আলু উৎপাদনে সপ্তম, করোনায় ১৩০ দেশে ভ্যাকসিন শুরুর আগে যে দেশে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে, আমেরিকা থেকে প্রবাসীরা এসে ভ্যাকসিন নিয়েছে। মির্জা ফখরুল-রিজভী সাহেবরা নানা সমালোচনা শেষে আবার কেউ রাতের আঁধারে, কেউ দিনের আলোতে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, করোনায় সমগ্র বিশ্ব যখন থমকে গেছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তখন ঘোষণা দিয়েছেন এই দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না, রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা মানুষ যারা শুধু একটু ঘুমানোর জায়গার স্বপ্ন দেখত, তারা বাড়ি পেয়েছে -এই চিত্রগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানাই, বলেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, খুলনার ডেপুটি কমিশনার মনিরুজ্জামান তালুকদার, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু ও এস এম জাহিদ হোসেন।
প্রসঙ্গত, এদিন খুলনায় ৩২ সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারকে ২৩ লাখ সহায়তা এবং ৮৬ সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর করোনা সহায়তা থেকে আট লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। ২০১৪ সালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের পর থেকে চলতি এপ্রিলের ২৫ তারিখ পর্যন্ত আট হাজার ১৫৬ সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারকে ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর করোনা সাহায্যের ১০ কোটি টাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা দেশব্যাপী সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/একেএম