Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর পরিবার বিপদে আছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ এপ্রিল ২০২২ ১৬:০৯

ঢাকা: ১০ বছর ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর পরিবার বর্তমানে অনেক বিপদে দিনযাপন করছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলীর পরিবার অনেক বিপদে আছে। পরিবারের সদস্যরা তার (ইলিয়াস আলী) ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যান্ডেল করতে পারছে না। তার গাড়ির ট্যাক্স দিতে পারছে না। এই বিষয়গুলো ইলিয়াসের পরিবারের কাছে মর্মান্তিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে ইলিয়াস আলীর বনানীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইলিয়াস আলীর মেয়ের ভর্তির ব্যাপারে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কোনো কলেজে মেয়েকে ভর্তি করছিল না। অনেক চেষ্টা-তদবির করে তার মেয়েকে ভর্তি করানো হয়েছে। এটি শুধু ইলিয়াস আলীর পরিবার নয়, গুম হওয়া সব পরিবারই এমন নিদারুণ কষ্টের মধ্যে আছে।

২০১২ সালে ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বনানীর বাসার কাছে আমতলী থেকে। তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, এক ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস এবং এক মেয়ে সাইয়ারা নাওয়াল।

দুপুর ১২টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে নিয়ে বনানীতে ইলিয়াস আলীর বাসায় যান। তিনি সেখানে ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী তাহসিনা রুশদীর লুনার সঙ্গে কথা বলেন। এসময়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ইলিয়াস আলীর পরিবারের জন্য ইদ উপহার নিয়ে যান।

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গুম হওয়া পরিবারগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ইদ উপহার পৌঁছে দিচ্ছি। বিভিন্ন জেলায় যারা ভিকটিম আছেন, তাদের জেলা পর্যায়ের নেতারা এই ইদ উপহার ও সহযোগিতা করার চেষ্টা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দুই জন ক্রসফায়ারে মারা গেছেন। এটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার চার মাস পরে। যতক্ষণ পর্য়ন্ত তারা (সরকার) ব্যবস্থা না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত এসব (বিচারবর্হিভুত হত্যাকাণ্ড) হবে। এর একমাত্র কারণ, এখানে কোনো জবাবদিহিতা নেই্। যেহেতু সরকারের জবাবদিহিতা জনগণের কাছে নেই, অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান আছে তাদেরও সেই জবাবদিহিতার থাকার প্রয়োজন তারা মনে করে না।’

ইলিয়াস আলীর সন্ধানে সরকারের প্রচেষ্টা নেই অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্ধানে সরকারের কোনো প্রচেষ্টাই দেখা যায় না। ইলিয়াস আলীর গুম হওয়ার বিষয়ে কোনো প্রচেষ্টা দেখা যায়নি, যেহেতু সরকারই ইনভলভড। যখন ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়ে গেছে, তখন তো মানুষজন দেখেছে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। যারা দেখেছেন তারাও গুম হয়েছেন, তার গাড়ির চালকও গুম হয়েছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার ও আওয়ামী লীগ দেউলিয়া (ব্যাংকরাপ্ট) হয়ে গেছে। তারা জাতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতকে অনুরোধ করতে চায়। বিষয়টা হচ্ছে যে, এই সরকারের সেই মুখ নেই। তারা এটা নিয়ে মানুষের কাছে দাঁড়াতে পারছে না।’

‘অন্যদিকে তারা তো ক্ষমতায় জোর করে বসে আছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এইসব বাহিনীকে ব্যবহার করছে। এইভাবে ব্যবহার করার পরে তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেবে, তাদের শাস্তি দেবে, তাদের বের করে দেবে অথবা আইনের আওতায় আনবে? এটা তারা করতে পারছে না। সেজন্য সেদিকে না গিয়ে যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেছেন— যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্যবস্থা নেওয়া হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ওঠানোর সম্ভাবনা নেই। যেহেতু সরকার গুম-খুন করে, নির্যাতন করে ক্ষমতায় টিকে আছে, তাদের নিয়ে এসব অপকর্ম করছে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তারা (সরকার) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে গেছে,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গুম থেকে ফেরত আসা সালাহউদ্দিন আহমেদের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, তিনি (সালাহউদ্দিন আহমেদ) ওখানে (ভারত) নিম্ন আদালতে মুক্ত হয়েছিলেন। পরে আবার আপার কোর্টে আপিল করে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

ইলিয়াস আলী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর