বিএনপি নেতারা কে কোথায় ইদ করবেন
২ মে ২০২২ ২১:৫২
ঢাকা: ইদ মানে খুশি। ইদ মানে আনন্দ। কিন্তু এই ইদ একেক জনের কাছে একেক রকম। বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের ইদ সব সময় এক রকম হয় না। ক্ষমতায় থাকলে তাদের ইদ একরকম, ক্ষমতার বাইরে থাকলে আরেক রকম। টানা ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি নেতাদের ইদ গত কয়েক বছর ধরে কিছুটা হলেও বিবর্ণ ও নিরানন্দে কাটছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পেলেও অসুস্থতার কারণে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’র চার দেওয়ালের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে তাকে। আর দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আট হাজার মাইল দূরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে থাকছে না দলের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় আয়োজনও।
তারপরও থেমে থাকবে না বিএনপি নেতাদের ইদ। করোনা মহামারিত্তোর বিরাজমান স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কেউ ইদ করবেন ঢাকায়, কেউ গ্রামে, কেউ দেশের বাইরে, কেউ আবার কারাগারে।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইদ যথারীতি গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ইদের দিন সন্ধ্যায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে ইদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরিবারের সদস্যরাও আসবেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ইদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে।
বিগত বছরগুলোর মতো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইদ করবেন লন্ডনে। স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে ইদ করবেন তিনি।
বিএনপির চেয়াপারসনের প্রেসউইং সদস্য শায়রুল কবির খানের দেওয়া তথ্য মতে, ইদের নামাজ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা যাবেন চন্দ্রিমা উদ্যানে। সেখানে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও ফাতেহা পাঠ করবেন তারা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরুউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকায় ইদ করবেন। তবে বরাবরের মতো এবারও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ইদের নামাজ পড়বেন চট্টগ্রামে। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. মঈন খান ইদ করবেন নিজ জেলা নরসিংদীতে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ইদ করবেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে। অনুপ্রবেশের দায়ে সেখানে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। তিনি জামিনে থাকলেও ভারত ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাকে এবারও সেখানে ইদ করতে হবে। ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর ও শামসুজ্জামান দুদু নির্বাচনি এলাকায় ইদের নামাজ পড়বেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমানুল্লাহ আমান, তাহসীনা রুশদীর লুনা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল ঢাকায় ইদ করবেন। যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন নির্বাচনি এলাকায় ইদ করবেন।
বিএনপির দলীয় ছয়জন এমপির মধ্যে পাঁচ জন নির্বাচনি এলাকায় ইদ করবেন। তবে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ইদের দিন ঢাকায় থাকবেন। সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, মোশাররফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম, উকিল আব্দুস সাত্তার, জাহিদুর রহমান নিজ এলাকায় ইদ করবেন।
ছাত্রদলের সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ঢাকায় ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল নিজ এলাকা বরিশালে ইদ করবেন বলে জানা গেছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান ঢাকায় ইদ করবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, মানুষের নিরাপত্তাহীনতা, ঘরমুখো মানুষের চরম দুর্ভোগ ইদ আনন্দকে অনেকটাই বিবর্ণ করে দিয়েছে। আর আমাদের তো ইদের আনন্দ উপভোগ করার সুযোগই নেই। দলের চেয়ারপারসন গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাসনে- সব কিছু মিলে আমাদের ইদ অনেকটা আনন্দহীন-ই হবে। তারপরও চাইব- দেশবাসী এবং দলের নেতাকর্মীরা যেন এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আনন্দের সঙ্গে ইদ উদযাপন করতে পারে।’
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম