মানুষের মধ্যে ইদের আনন্দ নেই: মির্জা ফখরুল
৩ মে ২০২২ ১৮:১৮
ঢাকা: দেশের মানুষের মধ্যে ইদের আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘ইদে আমরা সবসময় এই প্রত্যাশা করি যে দেশের সব মানুষের মধ্যে আনন্দ আসবে এবং আনন্দের সঙ্গে সবাই ইদুল ফিতর পালন করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যেভাবে দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে এবং একইসঙ্গে সাধারণ মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন, সেখানে আনন্দের সঙ্গে ঈদুল ফিতর পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে আনন্দ নেই।’
ইদুল ফিতরের দিন (৩ মে) চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা অর্পণের পর তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরম করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন এই অবস্থার অবসান ঘটান। আমরা যেন এই স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আমরা যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারি এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি— এই আমাদের আজকের প্রার্থনা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইদুল ফিতর ও ইদুল আজহার দিনে আমরা দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি জিয়ারত করতে। এবার অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এসেছি। কারণ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আসামি করা হয়েছে। ছয় শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। সহাস্রাধিক নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এরকম একটি চরম ফ্যাসিবাদী শাসনে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে এবং মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
সাজাপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের বিদেশে গমনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পেলেও রাজনৈতিক কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না সরকার। এই ঘটনা (সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশযাত্রা) থেকে প্রমাণিত হয়, বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে খালেদা জিয়ার মামলাকে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক মামলা এবং সাজা দেওয়াটাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকেই যারা এ দেশে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য লড়াই করেন তাদের বিরুদ্ধে এই ধরনের দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা মহানগর বিএনপির আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জু্য়লে, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহীম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর