সীমান্তের ইদ: শূন্য রেখায় ২ দেশের স্বজনদের ভিড়
৩ মে ২০২২ ১৯:২৫
দিনাজপুর: এক পাশে ভারতে, অন্য পাশে বাংলাদেশ। মাঝখানে সীমানা বেষ্টনী কাঁটাতারের বেড়া। পবিত্র ইদুল ফিতরের (৩ মে) দিনে ভারতে থাকা আত্মীয়দের এক নজর দেখতে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে জড়ো হয়েছেন কয়েকশ’ মানুষ। এখানে এসে সরাসরি কথা না বলতে পারলেও দূর থেকে নিকট আত্মীয়কে দেখে চোখের শান্তি মেটাচ্ছেন তারা।
মঙ্গলবার (৩ মে) সকাল থেকেই হিলি সীমান্তে শূন্যরেখা জড়ো হতে থাকে দর্শনার্থীরা। সরেজমিনে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এক অন্যরকম দৃশ্য। জড়ো হওয়া দশনাথীরা সীমানা ঘেঁষে দূরপাল্লার রেললাইনে সেলফি তুলছেন। কেউ দূরে দাঁড়িয়ে নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে ইশারায় কথা বলছেন। বড়দের সঙ্গে সঙ্গে ছোটরাও শামিল হয়েছে এই উৎসবে। ভারত ও ভারতে থাকা স্বজনদের এক নজর দেখতে রংপুর, দিনাজপুর, ফুলবাড়ী, বগুড়া, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন তারা।
সেখানে কথা হয় রংপুরের মিঠাপুকুর এলাকা থেকে আসা আহসান হাবীব নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবারা সাত ভাই। এর মধ্যে আমার বাবা বাংলাদেশে থাকেন। বাকি চাচাদের সবাই ভারতে বসবাস করেন।’
তিনি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি। ফেসবুক মেসেঞ্জার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। আজ এসে সরাসরি কথা না বলতে পারলেও দূর থেকে এক নজর দেখতে পেয়ে খুব খুশি লাগছে।’
দিনাজপুর থেকে আসা মরিয়ম বিবি নামে এক মহিলা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই ভারতে থাকে। আমার চাচাকে দেখতে এখানে এসেছি। কাছে গিয়ে কথা বলতে পারলাম না। কিন্তু দূর থেকে দেখে ভালো লাগলো।’
গাইবান্ধা থেকে আসা রাকিবুল নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। রাকিবুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধুসহ আমরা সাত জন এখানে ঘুরতে এসেছি। ভারত দেখা হয়নি এত কাছ থেকে। অন্য একটি দেশ ও সেখানকার মানুষদের দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দ লাগছে। তবে বিজিবি সদস্যরা কাছে গিয়ে দেখতে দিচ্ছেন না।’
বগুড়া থেকে আসা শিউলি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি আমার বাবার সঙ্গে এসেছি। আমার খুব ভালো লাগছে। নিজ চোখে ভারত দেখলাম। আমার চাচা ভারতে থাকেন। চাচার মেয়েকে দূর থেকে দেখতে পেয়ে খুব খুশি লাগছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারণে গত দুই বছর ভারতে থাকা স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোন মেসেঞ্জার বা হোয়াটস অ্যাপে কথা হতো। কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু দিনে দূর থেকে হলেও এভাবে আয়োজন হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে রয়েছি। দুই দেশের লোকজন ইদের দিনে দু’পাশে জড়ো হয়। তারা তাদের নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে আসে। কিন্তু আমরা দায়িত্বের কারণে কাছে যেতে দিতে পারি না। সেজন্য দূর থেকে দেখেই তাদের চলে যেতে হয়।’
সারাবাংলা/পিটিএম