Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’র পূর্বাভাস, মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ মে ২০২২ ১৭:২১

ঢাকা: আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আর এটি যেকোনো সময় ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’তে পরিণত হয়ে ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। এমনকি ওই সময় এটি বাংলাদেশ উপকূলেও আঘাত হানতে পারে— এমন পূর্বাভাসও রয়েছে।

বাংলাদেশে আঘাত হানলে ঘূর্ণিঝড়টি মোকাবিলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের এখন বড় ধরনের ঝড় মোকাবিলার স্বক্ষমতা রয়েছে। এবং আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি।

বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় পূর্ব প্রস্তুতি বিষয়ে সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দূর্যোগ প্রতিমন্ত্রী।

ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, আমরা সুন্দরভাবে এটি মোকাবিলা করতে পারব। ঘূর্ণিঝড় আসানি উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিম বাংলা হয়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় আঘাত হানতে পারে। বুধবার (৪ মে) জানতে পেরেছি ভারত মহাসাগরের আন্ধামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি সাইক্লোনিক সিস্টেম ডেভলপ করেছে। যেটি ৯ তারিখের মধ্যে হয়তো লঘুচাপে রূপান্তরিত হবে, যেটাকে আমরা লো প্রেসার বলি। এরপর ধীরে ধীরে এটা সুস্পষ্ট লঘুচাপের রূপ ধারণ করবে। আর ১১ তারিখের দিকে নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

তিনি বলেন, “যদি ঘূর্ণিঝড় হয় তাহলে এর নাম হবে ‘আসানি’। যদিও এর ল্যান্ডফলটা এখন পর্যন্ত ক্যালকুলেশন হয়নি। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পর জানাতে পারব কবে এটা বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু বাংলাদেশ একটি ঘূর্ণিঝড় প্রবণ দেশ। আমাদের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, ঘূর্ণিঝড়ে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সেজন্য নতুন ঝড় মোকাবিলার জন্য আমরা আজ এসওডি অনুযায়ী প্রাথমিক সভা ডেকেছি। এখানে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনা করেছি। কবে লঘুচাপ, কবে নিম্নচাপ সৃষ্টি হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিটা স্টেপে আমাদের প্রস্তুতি কী, কাদের আমরা সংযুক্ত করব, কাদের দায়িত্ব দেবো, কাদের নির্দেশনা দেবো— সেগুলো আমরা আজ ঠিক করেছি। পরবর্তী সময়ে যদি সতর্ক সংকেত দেওয়া হয় এবং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দিলে আমরা একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে নির্দেশনাগুলো মাঠ পর্যায়ে দিয়ে দেবো।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করছে। আমাদের যে এসওডি আছে, সে অনুযায়ী কখন কী করতে হবে- সেটা আমরা জানিয়ে দিয়েছি। সবাই আমরা এখন এলার্ট। পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে কি না? জানতে চাইলে ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, ‘সিপিপি ভলান্টিয়ার ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা- সেগুলো করা হয়েছে। এর পর যদি গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় তাহলে সেল্টার সেন্টারগুলো প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের প্রায় সাত হাজার সেল্টার হাউজ আছে। প্রয়োজনে স্কুল-কলেজ এবং অন্যান্য ভবন কাজে লাগাব।’

তিনি বলেন, আম্পানের সময় ১৪ হাজারেরও বেশি সেল্টার সেন্টার প্রস্তুত করেছিলাম। সেখানে প্রায় ২৪ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দিতে পেরেছিলাম। আমাদের সেই ক্যাপাসিটি ও প্রস্তুতি আছে। আশা করি, আমরা সুন্দরভাবে এটি মোকাবিলা করতে পারব।’

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ও আন্দামানের লঘুচাপ নিয়ে কথা হয় আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি জানান, আন্দামান সাগরে যে লঘুচাপের পূর্বাভাস রয়েছে, তা এখনো সেভাবেই রয়েছে। তবে লঘুচাপ সৃষ্টি হলে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এবং তা বাংলাদেশের কয়েকটি এলাকায় আঘাত হানতে পারে। যদিও এখনো লঘুচাপের সৃষ্টি হয়নি, তবে যেকোনো সময় পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

আসানি ঘূর্ণিঝড়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর