লঞ্চে ঢাকায় ফেরা, যাত্রীরা বললেন, ‘দারুণ ইদ হয়েছে’
৫ মে ২০২২ ১৯:২০
ঢাকা: ইদুল ফিতরের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। বাস ট্রেনের পাশাপাশি লঞ্চেও তারা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। যাত্রীরা বললেন, এবারের যাত্রা ছিল অনেক স্বস্তির। ইদ শেষে ঢাকায় ফিরতেও কোনো ঝক্কি-ঝামেলা হয়নি। দারুণ এক ইদ হয়েছে এবার জানালেন ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এ সব কথা বলেন।
পরিবার পরিজন নিয়ে বরিশাল থেকে ঢাকায় ফিরেছেন সাদিয়া জামান মৌরি। তিনি বলেন, ‘ঝামেলা এড়াতে ইদের কয়েকদিন আগে বরিশালে গিয়েছিলাম। তখনও কোনো সমস্যা হয়নি। নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরেছিলাম। দারুণ এক ইদ শেষে ঢাকায় ফিরলাম। ফিরতেও কোনো সমস্যা হয়নি। প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকায় বাড়তি ভাড়াও দিতে হয়নি। এরকমটাই চাই আমরা।’
পটুয়াখালী থেকে পরিবার নিয়ে ফিরেছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে কখনও এমন স্বাচ্ছন্দ্যের ইদ হয়নি। এবারই প্রথম। কোনোরকম ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়াই ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন। নৌ পুলিশ ছিল সক্রিয় ছিল।’
বরগুনা থেকে এসেছেন নাবিল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ইদের দুইদিন আগে গ্রামে যাওয়ার সময় অনেক কষ্ট হয়েছে। টাকাও লেগেছে দ্বিগুণ। তবে আসার সময় তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ঘাটে নেমে কিছুটা অব্যবস্থাপনা রয়েছে। এক বস্তা চাউল এনেছি, এ জন্য ঘাট কর্তৃপক্ষ ৩০০ টাকা নিয়েছে। কুলি নিয়েছে ১০০ টাকা। আবার বাসে নেবে অন্তত ১০০ টাকা বেশি। এরকম হলে কী করবো আমরা। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।’
কিছু যাত্রীর অভিযোগ, বেশির ভাগ লঞ্চের ওয়াশরুমে গন্ধের জন্য যাওয়া যায় না। পরিষ্কারও করা হয় না। লঞ্চে খাবার মান নিম্ন মানের। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয় শুধু কেউ টাকা বেশি নিচ্ছে কি না সেজন্য। ভ্রাম্যমান আদালত চালানো হলে সবকিছু দেখা দরকার।
আবার কিছু যাত্রীর অভিযোগ, লঞ্চ থেকে নামার পর সিএনজি চালকরা অনেক বেশি ভাড়া নেয়। না হলে যেতেই চায় না। আবার বাসে উঠলেও ৩০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা নেয়। যেসব বাস থাকে, এর সবগুলোই একই হারে ভাড়া নেয়। বাড়ি থেকে আসার পর এসব বিড়ম্বনা মেনে নেওয়া অনেক বেশি কষ্টকর। কর্তৃপক্ষের এসব বিষয়েও নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাত থেকেই বাসগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকে। লঞ্চ থেকে নেমে যাত্রীরা আসলে পছন্দমতো গাড়িতে উঠতে পারেন না। লাইনে থাকা গাড়িতে উঠতে হয়। একটা গাড়ি চলে যাবে এরপর আরেকটা গাড়িতে উঠতে হয়।
জানা গেছে— গাড়ি প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে মাসিক হারে একটা মোটা অংকের টাকা চাঁদা দিতে হয়। আর মোটা অংকের চাঁদা দেওয়ার কারনে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে থাকে। তবে ছাত্রলীগ বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌ পুলিশের সদরঘাটে কর্মরত উপ পরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি নৌপথে যাত্রীরা যেন স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারে। সেই অনুযায়ী নানারকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। আমাদের এরিয়ার মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি এবার। তবে লঞ্চঘাটের বাইরে কিছু ঘটে থাকলে সেই দায়িত্ব আমাদের না।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে