।। জাবি প্রতিনিধি ।।
সাভার: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আ. লীগ পন্থী শিক্ষকদের দুই গ্রুপ (উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির)-এর শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় অবরোধ চলছে। দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ ও তালা ঝুলিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শরীফ এনামুল কবির পন্থী শিক্ষকরা।
‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে বুধবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। কর্মসূচি চলবে বেলা ১২টা পর্যন্ত। কর্মসূচিতে তারা হামলাকারী শিক্ষকদের বিচার ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ দাবি করেন।
এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের সাথে উপাচার্যের ডাকা আজকের মতবিনিময় সভাও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন কর্মসূচি পালনকারীরা।
দুই প্রশাসনিক ভবন অবরোধ থাকার কারণে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে সকল ধরনের প্রশাসনিক কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা ধর্মঘটের আওতা মুক্ত রয়েছে।
এদিকে শিক্ষকদের হাতাহাতির ঘটনায় মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হারুন অর রশীদ খানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার (টিচিং) মোহাম্মদ আলী সদস্য সচিব।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকায় পরিবহন ডিপোর সামনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম এবং সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
উপাচার্য ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট-১৯৭৩, স্ট্যাটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে আহুত ধর্মঘটের অংশ হিসেবে ভোর চারটার দিকে শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী ৫ জন শিক্ষক পরিবহন ডিপোর সামনে অবস্থান নিয়ে তারা ডিপোর ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ঘটনা জানতে পেরে সাড়ে ৪টার দিকে ফারজানা ইসলামের অনুসারী শিক্ষকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন দুপক্ষের শিক্ষকরা।
এ ঘটনা সম্পর্কে উপাচার্যকে জানাতে আন্দোলনকারী প্রায় ১৫ জন শিক্ষক উপাচার্যের বাসভবনে দেখা করেন। তারা প্রভোস্ট নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এসময় উপাচার্য শিক্ষকদের বলেন, প্রভোস্টদের মেয়াদ শেষ হয়েছে বিধায় তাদের অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রভোস্ট সাময়িক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সাড়ে ১০টায় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম প্রশাসনিক ভবনে আসলেও তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে পারেননি। এখানেও দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে উপাচার্য শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অনুরোধ করে স্থান ত্যাগ করে।
অন্যদিকে সাড়ে ১১টায় প্রশাসনপন্থী শিক্ষকরা আন্দোলনকারী শিক্ষকদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে বিচার দাবি করে প্রশাসনিকভবনের সামনে মানবন্ধন করেছেন।
সারাবাংলা/টিএম